Thank you for trying Sticky AMP!!

চট্টগ্রামে করোনা রোগী ২২০০, শয্যা ৪২০

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় কোভিড-১৯ রোগীদের জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা আছে ৪২০টির মতো। মৃত্যু ও সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পর রোগীর সংখ্যা গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ছয়টা পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩ জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী, ৬০ শতাংশ রোগীকে হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়ার প্রয়োজন। তাহলে এই মুহূর্তে চট্টগ্রামের বিভিন্ন কোভিড হাসপাতালে ১ হাজার ২০০ শয্যা প্রয়োজন।

শয্যার অভাবে চট্টগ্রামের দুই-তৃতীয়াংশ কোভিড রোগী বাড়িতেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। অনেকেই একটি শয্যা পেতে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে তদবির করছেন। কিন্তু তাতে বিশেষ ফল মিলছে না।

এ অবস্থায় সরকার চট্টগ্রামের তিনটি বেসরকারি হাসপাতাল কোভিড রোগীদের জন্য নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে। বেসরকারি হাসপাতাল হলিক্রিসেন্টের জন্য ২৩ জন চিকিৎসক ও ৩০ জন নার্সও নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওয়ার্ডবয় ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাবে গতকাল পর্যন্ত হাসপাতালটি চালু করা যায়নি।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি প্রথম আলোকে বলেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে হলিক্রিসেন্ট হাসপাতাল চালু হবে। সেখানে ১০টি আইসিইউসহ ৬০–৭০ শয্যা আছে। শুরুতে আইসিইউ চালু করা সম্ভব না। কারণ, হাতে দক্ষ জনবল নেই। তবে কিছু লোককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা তৈরি হলে আইসিইউ চালু হবে। 

সিভিল সার্জন বলেন, ইউএসটির বঙ্গবন্ধু হাসপাতাল এবং ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। উভয় হাসপাতালে কয়েকটি আইসিইউসহ আরও ১৫০ শয্যা পাওয়া যাবে। তখন শয্যার সংকট কিছুটা কাটবে।

>শয্যার অভাবে দুই-তৃতীয়াংশ রোগী বাড়িতেই চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন।
তদবিরেও বিশেষ ফল মিলছে না।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জনের দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল ভোর পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় ২ হাজার ২০০ কোভিড রোগী শনাক্ত হয়। এর মধ্যে মারা গেছেন ৬৫ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৯৭ জন। অর্থাৎ, আরও ২ হাজার ৩ জন রোগী চিকিৎসাধীন, যাঁদের মধ্যে হাসপাতালে ঠাঁই হয়েছে প্রায় ৪০০ রোগীর। 

চট্টগ্রামের জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি এবং ফিল্ড হাসপাতাল ছাড়াও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে কোভিড রোগীর চিকিৎসা চলছে। কিন্তু নগরের কোনো হাসপাতালে শয্যা খালি নেই। চট্টগ্রামের জেনারেল হাসপাতালে কেবল আইসিইউ সুবিধা আছে। একসঙ্গে ১০ জন রোগী সেখানে চিকিৎসা নিতে পারেন। শয্যা না থাকায় অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি চিকিৎসা নিতে ঢাকায় চলে গেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও করোনাবিষয়ক স্বাচিপের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক আ ম ম মিনহাজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ কোভিড রোগী বাড়ছে। কিন্তু হাসপাতালের শয্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। এ কারণে রোগী ভর্তির জন্য প্রতিদিন ১৫-২০ জনের কাছ থেকে তদবির আসে। দু-একজনের তদবির রাখতে পারছি। কোভিড রোগীরা হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ ও হতাশার মধ্যে আছেন।

মিনহাজুর রহমানের পরামর্শ, চট্টগ্রামের সব বেসরকারি মেডিকেল হাসপাতালে কোভিড রোগের চিকিৎসা শুরু করা দরকার। তিনি বলেন, ‘সময় অনেক নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু নানা সিদ্ধান্তহীনতার কারণে শয্যা বাড়ানো যাচ্ছে না। এটা আমাদের দুর্ভাগ্য।’