Thank you for trying Sticky AMP!!

চবিতে গাছকাটা প্রতিরোধে গঠিত কমিটির তিন সদস্যের পদত্যাগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশ থেকে নির্বিচার সাবাড় হচ্ছে গাছ। পাহাড় কেটে তৈরি করা হয় রাস্তা। সম্প্রতি ক্যাম্পাসে জীববিজ্ঞান অনুষদের পেছনের পাহাড়ে। ছবি: সুজয় চৌধুরী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের পাহাড় থেকে গাছ কাটার বিষয়টি প্রতিরোধ করতে গঠিত কমিটির তিন সদস্য পদত্যাগ করেছেন। আজ রোববার বিকেলে তাঁরা পদত্যাগ করেন।

ক্যাম্পাসের বনজ গাছপালা সংরক্ষণ ও গাছসহ যেকোনো ধরনের দ্রব্যাদি ক্যাম্পাসের বাইরে নেওয়া এবং নির্বিচারে গাছকাটার বিষয়টি প্রতিরোধ করতে গত ২৯ জানুয়ারি এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটিতে আহ্বায়ক করা হয় প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসানকে। এতে সদস্য হন সহকারী প্রক্টর এস এম জিয়াউল ইসলাম, মোহাম্মদ রিফাত রহমান, সম্পত্তি (এস্টেট) শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মাহাবুব হারুন চৌধুরী, সেকশন অফিসার মো. বদিউল আলম ও মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তাদের মধ্যে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা পদত্যাগ করেন।

প্রথম আলোর অনুসন্ধানে দেখা যায়, গত চার বছরে ক্যাম্পাসের আশপাশের পাহাড়ি এলাকা থেকে অন্তত সাত হাজার গাছ কাটা হয়। কাটা গাছ নিতে পাহাড় কেটে তৈরি করা হয় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা। এ নিয়ে গতকাল শনিবার প্রথম আলোতে ‘চার বছরে সাত হাজার গাছ সাবাড়’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদ প্রকাশ হওয়ার একদিন পরেই তদারকি কমিটির সদস্যরা পদত্যাগ করলেন।

পাহাড়ে কেটে রাখা হয়েছে গাছ। সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। ছবি: প্রথম আলো

পদত্যাগের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন কমিটির আহ্বায়ক ও প্রক্টর এস এম মনিরুল হাসান। তিনি বলেন, ‘গাছকাটার বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। উল্টো সামাজিকভাবে মর্যাদাহানি হচ্ছি। গাছ ব্যবসায়ী মো. হানিফ গাছ কাটার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদা দেন বলে দাবি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদা দেয় মানে আমাদেরও চাঁদা দেয়। এটি মিথ্যা ও মর্যাদাহানিকর। ভালোভাবে কাজ করতে গিয়ে যদি মর্যাদাহানি হয় তাহলে আমি কাজ করতে রাজি না।’ তিনি আরও বলেন, গাছ ও পাহাড় কাটার বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করার পর নিরাপত্তা দপ্তরের এক কর্মকর্তা হুমকিও দিয়েছেন। এটি নিয়ে কাজ করলে বিশ্ববিদ্যালয় অচল হয়ে যাবে বলেও তিনি হুমকি দেন। ফলে এ কমিটিতে কাজ করার প্রশ্নই আসে না।

কমিটির সদস্য মোহাম্মদ রিফাত রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশ থেকে নির্বিচারে গাছ কাটা হবে, পাহাড় কাটা হবে—কিন্তু কিছু বলা যাবে না। বললে নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। আমাদের পড়াশোনা আছে, একাডেমিক কাজ আছে। ফলে আমরা পদত্যাগের বিষয়টি উপাচার্যকে জানিয়েছি। তিনি সম্মতি দিয়েছেন।’

নিয়মিত গাছ কাটা ও পরিবহনে যুক্ত শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত চার বছরে বিভিন্ন সময়ে ক্যাম্পাসের মূল ফটক দিয়ে কাটা গাছ বের করার অনুমতি নেন মো. বজল নামে হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর এলাকার এক ব্যক্তি। সর্বশেষ গত বছরের ৩১ অক্টোবর মো. বজল ক্যাম্পাসের দক্ষিণ দিকের পাহাড়তলী এলাকা থেকে নিজের বাগানের গাছ দাবি করে দুই হাজার টুকরা আকাশি ও মেহগনি কেটে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেন। এই অনুমতি দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি (এস্টেট) শাখা ও নিরাপত্তা দপ্তর। এর আগে গত বছরের ১৬ জানুয়ারি তিনি পশ্চিম দিকের নশাবনপাহাড়ি এলাকা থেকে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি নেন। বজল ছাড়াও এই গাছ কাটায় জড়িত আছেন মো. হানিফ নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি। তিনি নিজেকে যুবলীগের নেতা দাবি করেন।