Thank you for trying Sticky AMP!!

ছড়ার ভাঙনে রাস্তা বিলীন

কবাখালী ছড়ার ভাঙনে রাস্তা বিলীন হয়ে যাওয়ায় ভাঙনের স্থানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে এভাবে ঝুঁকি নিয়ে পার হয় শিশুরা। সম্প্রতি তোলা। প্রথম আলো

খাগড়াছড়ির দীঘিনালার কবাখালী ছড়ার ভাঙনে ইট বিছানো রাস্তা বিলীন হয়ে যাওয়ায় দক্ষিণ মিলনপুর গ্রামের সাড়ে চার শ পরিবার চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছে।

৮ বছর ধরে এমন দুর্ভোগ নিত্যসঙ্গী ওই গ্রামের বাসিন্দাদের। সড়কের ভাঙা স্থানে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে গ্রামের বাসিন্দাদের। ভাঙনের এলাকা পার হতে গিয়ে ছড়ায় পড়ে চার বছর আগে এক ব্যক্তির মৃত্যুও ঘটেছে। এরপরও সড়কটি সংস্কার হয়নি।

সম্প্রতি উপজেলার কবাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মিলনপুর এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কবাখালী বাজার থেকে দক্ষিণ মিলনপুর হয়ে হাচিনসনপুরমুখি দেড় কিলোমিটার ইট বিছানো রাস্তাটির বেশির ভাগই কবাখালী ছড়ায় বিলীন হয়ে গেছে। রাস্তার ভাঙা অংশে বসানো বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচল করছে পথচারীরা। রাস্তা ভাঙনের পাশাপাশি ওই এলাকায় এখন বসতবাড়িও ভাঙনের কবলে পড়েছে।

দক্ষিণ মিলনপুর গ্রামের মো. নুরুজ্জামান (৭০) বলেন, ‘গ্রামে সাড়ে চার শ পরিবারের বসবাস। ৮ বছর আগে গ্রামের মধ্যে রাস্তা দিয়ে গাড়ি আসত। আর এখন ছড়ায় রাস্তা বিলীন হওয়ায় গাড়ি তো দূরের কথা লোকজনের চলাচল করাও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। রাস্তার পর এখন আমাদের বসতবাড়িও ভাঙনের কবলে পড়েছে।’

কুলসুম বেগম (৪৫) বলেন, ‘রাস্তার চিহ্নও নেই এখন। আমরা বাঁশের সাঁকো বানিয়ে চলাচল করছি। নির্বাচনের সময় আমরা ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দাবি করেছিলাম। আমাদের দাবি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।’

মো. বাদশা মিয়া (৩৩) বলেন, ভাঙনের এলাকা পার হতে গিয়ে চার বছর আগে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক ব্যক্তি ছড়ায় পড়ে মারা গেছেন। শিশুসহ অনেকই ছড়ায় পড়ে আহত হয়েছে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে ওই রাস্তায় চলাচল করতে হয়।

গ্রামের ফুলমতি বেগম (৪০) ও সাবিনা ইয়াসমিন (৩২) বলেন, তাঁদের ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়ে পাঠান আশঙ্কা নিয়ে। নড়বড়ে সাঁকো পার হয়ে বিদ্যালয়ে যেতে হয় তাদের। বৃষ্টি হলে বিদ্যালয়ের যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী বন্যা আক্তার ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাকিল হোসেন বলে, বৃষ্টি হলে তারা বিদ্যালয়ে যায় না। ছড়ায় তখন প্রচুর স্রোত থাকে। বাঁশের সাঁকো পার হতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। কয়েকজন পড়ে গিয়ে কোনো রকমে বেঁচে গিয়েছে।

দীঘিনালা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দক্ষিণ মিলনপুর এলাকায় কবাখালী ছড়ার ভাঙনে রাস্তা বিলীন হয়ে যাওয়ার বিষয়টি আমি সরেজমিনে দেখেছি। এলাকার সাড়ে চার শ পরিবার ভাঙা সড়কে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। সড়ক সংস্কারের পাশাপাশি কবাখালী ছড়ার ভাঙনরোধেরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বসতবাড়ি রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, পার্বত্য জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন সংস্থাকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’