Thank you for trying Sticky AMP!!

জামালপুরে গাছের সঙ্গে বেঁধে নারীকে নির্যাতনের অভিযোগ

জমি নিয়ে বিরোধের জেরে জামালপুর সদর উপজেলায় এক নারীকে মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে একটি মামলাও হয়েছে। ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবার ঘটলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সোমবার এর একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এরপর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

গত সোমবার সন্ধ্যায় ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, এক মধ্যবয়সী নারীকে সুপারিগাছের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছে। কিছু লোক ওই নারীকে বেঁধে রাখার দৃশ্য দেখছেন। ২ মিনিট ৪৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিওর কিছু দৃশ্যে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন একটি জমিতে গর্ত করছেন।

এ ঘটনায় ওই নারীর ছেলে জামালপুর সদর উপজেলার জুকারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সুলতান মাহমুদ ওরফে ফকিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে থানায় একটি মামলা করেছেন।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারীর ছেলে সুমন দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, জুকারপাড়া গ্রামে পৈতৃক সূত্রে তাঁরা ১৬ শতাংশ জমি পান। ওই জমির পাশে তাঁর চাচা মদন মহনেরও ১৬ শতাংশ জমি ছিল। চাচার অংশটুকু ২০০৭ সালে সুলতান মাহমুদের স্ত্রী রেখা বেগম কিনে নেন। ওই জমি কেনা নিয়ে সুলতানের সঙ্গে তাঁদের বিরোধ বাধে। এ নিয়ে আদালতে একটি মামলাও রয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সুলতান মাহমুদ লোকজন নিয়ে ওই জমি দখল করছেন—এমন খবর পেয়ে তাঁর মা ও ভাগনি সেখানে যান। সেখানে সুলতান মাহমুদ প্রথমে তাঁর মা ও ভাগনিকে মারধর করেন। পরে ভাগনির ওড়না দিয়ে একটি সুপারিগাছের সঙ্গে তাঁর মাকে বেঁধে রাখেন।

সুমন আরও বলেন, তিন ঘণ্টা গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখার পর তাঁর মাকে স্থানীয় লোকজন গিয়ে উদ্ধার করেন। এরপর সুমন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে জামালপুর সদর থানায় যান। পরে সেখান থেকে উপজেলার নারায়ণপুর পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ওই রাতেই তদন্তকেন্দ্রে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। এরপর শুক্রবার পুলিশ গিয়ে জমির সব স্থাপনা সরিয়ে দেয়। পরে শুক্রবার রাতে জামালপুর সদর থানায় সুলতান মাহমুদকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে একটি মামলা করেন সুমন। ওই মামলায় পুলিশ শুক্রবার রাতেই নজরুল ইসলাম নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায়। কিন্তু রোববার গ্রেপ্তার নজরুল জামিনে বের হয়ে গেছেন। সুমনের অভিযোগ, নজরুল জামিনে বের হওয়ার পর থেকে মামলা তুলে নিতে তাঁদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছেন।

অভিযুক্ত সুলতান মাহমুদ মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, জমিটি তিনি কিনেছেন। সেটা এখন তাঁর দখলে আছে। তাঁর দাবি, সুমনের পরিবার তাঁকে ডিস্টার্ব (বিরক্ত) করে। তবে ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করেছেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে সুলতান বলেন, তিনি একটা সালিস বৈঠকে আছেন, তাই বিষয়টি নিয়ে পরে কথা বলবেন।

জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালেমুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে থানায় মামলা নিয়েছে। এরপর এক আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থলে এখনো পুলিশ মোতায়েন করা আছে। তবে বাদী পক্ষকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তাঁর জানা নেই উল্লেখ করে বলেন, হুমকির বিষয়টি তাঁকে জানালে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।