Thank you for trying Sticky AMP!!

জালিয়াতির মাধ্যমে ভূমি গ্রাসের ষড়যন্ত্র চলছে

সিলেট নগরের শিবগঞ্জে মণিপুরিদের উন্নয়ন ভূমি জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাস করার চেষ্টা করেছে একটি চক্র। ওই উন্নয়ন ভূমি ইজারা নিয়ে বর্তমানে মণিপুরি যুব সমিতি তাঁত উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে সেখানে বিলুপ্তপ্রায় মণিপুরি তাঁত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হচ্ছে। তবে কোটি টাকার ভূমি গ্রাস করতে উঠেপড়ে লেগেছে একটি ভূমিখেকো চক্র। এ নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করেছে মণিপুরি সমাজ। ভূমিদস্যুদের কবল থেকে এই ভূমি রক্ষার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ভূমিমন্ত্রী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ সচেতন সিলেটবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
গত শনিবার দুপুরে নগরের শিবগঞ্জ সেনপাড়া এলাকার মণিপুরি যুব সমিতির মাঠে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্য ধীরেন সিংহ বলেন, বিগত এসএ খতিয়ান অনুযায়ী সিলেটের রায়নগর মৌজার জেএল নম্বর ৯৭, খতিয়ান নম্বর ১৮৩, দাগ নম্বর ১৪৩-এর শূন্য দশমিক ৪৮ একর তালিকাভুক্ত মালিক ছিলেন দিগেন্দ্র সিং মণিপুরি ও নৃপেন্দ্র সিং মণিপুরি। তাঁদের বাবার নাম জয় সিং মণিপুরি। বিনা রেজিস্ট্রি দলিলে খতিয়ানভুক্ত ছিলেন মুজাহের পুরের শাহ নাজমুল হোসেন। ১৯৬৫ সালের পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের সময় নৃপেন্দ্র সিং মণিপুরি তাঁদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ভারতে চলে যান। পরে সম্পত্তিটি তৎকালীন শত্রু সম্পত্তি ‘অর্পিত’ আইন দ্বারা পরিবর্ধিত হয়ে তালিকাভুক্ত হয়।
ওই জমিতে প্রায় অর্ধশত বছর আগে মণিপুরি যুব সমিতির কার্যালয় স্থাপন করা হয়। এই সমিতির মাধ্যমে মণিপুরি সম্প্রদায়ের জন্য নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। তাই এই সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের জন্যও একটি জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদের ওপর একটি ভূমিখেকো চক্রের কুদৃষ্টি পড়েছে। তারা সম্পত্তি গ্রাস করতে উঠেপড়ে লেগেছে। ১৯৭৭ সালে এখানে মণিপুরি তাঁতশিল্প প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে ওঠে। পরে পর্যায়ক্রমে আরও নানা কার্যক্রম এখান থেকে পরিচালিত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে ধীরেন সিংহ বলেন, মণিপুরি সম্প্রদায়ের আবেগের এই জায়গাটি দখল করতে আবদুল মোছাব্বিরের সহযোগিতায় মিথ্যা, বানোয়াট ও জালিয়াতির মাধ্যমে রঞ্জন সিংহ নোঙথন ও সূর্য কুমার উরফে বাবুনু তৎপর হয়ে ওঠেন। এখনো তাঁরা এই ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের পূর্বপুরুষ নদিয়া সিং মণিপুরি পৃথক খতিয়ানে তালিকাভুক্ত এবং তাঁদের উত্তরসূরিরা সেখানেই বসবাস করছেন। জালিয়াতির মাধ্যমে টুলটিকর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ভূমিখেকো আবদুল মোছাব্বিরের কাছ থেকে জাল ও বানোয়াট সনদ সংগ্রহ করে আংজাও সিংকে নদিয়া সিংয়ের সহোদর প্রমাণের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ৫৪ বছর থেকে এখানে রঞ্জন সিং বা তাঁদের উত্তরসূরিদের বসবাস বা দখলের প্রমাণ নেই। বর্তমানে নৃপেন্দ্র সিংয়ের প্রাচীরঘেরা এই ভূমিতে রঞ্জনদের কোনো দখল নেই। কিন্তু ১০৪৩/১২, আরজিতে এবং সাম্প্রতিক এক সংবাদ সম্মেলনে তা রঞ্জনদের দখলে আছে বলে চরম মিথ্যাচার করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বারের সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম, ২০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুহিবুর রহমান, সিলেটের শ্রীশ্রী জগন্নাথ জিউর আখড়া কমিটির সভাপতি সুরজিৎ সিং, মণিপুরি সাহিত্য সংসদের যুগ্ম সম্পাদক সমেন্দ্র সিংহ ও মুক্তিযোদ্ধা মনমোহন সিংহ।
যোগাযোগ করা হলে রঞ্জন সিংহ বলেন, ‘আদালতের মামলায় আমরা ভূমির মালিকানার রায় পেয়েছি। মণিপুরি যুব সমিতির দাবি অযৌক্তিক।’