Thank you for trying Sticky AMP!!

জিয়াউর রহমানকে আমি মুক্তিযোদ্ধা বলি না

রাজশাহী কলেজে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দেন সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। ২৪ ফেব্রুয়ারি

‘১৯৭২ সালের দিকে ছাত্রলীগকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু হয়। গঠিত হয় জাসদ। গণবাহিনী গঠন করে ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের হত্যা করা হয়। রাজশাহীতেও অনেককে হত্যা করা হয়। ছাত্রলীগকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু যখন দেশ গঠনে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক সে সময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের মূল শক্তির ওপর আঘাত করেছিলেন তথাকথিত সেক্টর কমান্ডার জিয়াউর রহমান, যাঁকে আমি মুক্তিযোদ্ধা বলি না। যাঁর খেতাব বাতিলের জন্য দাবি উঠেছে।’

সেই জিয়াউর রহমান হলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা। তিনি নেপথ্যে থেকে সব ষড়যন্ত্রকারীকে নিয়ে বা তৎকালীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য পরাশক্তির সহযোগিতা নিয়ে রাতের অন্ধকারে সরকার পতনের জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিলেন। বুধবার দুপুরে রাজশাহী কলেজে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান সম্পর্কে এসব কথা বলেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন।

দীর্ঘ ছয় বছর পর মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি রকি কুমার ঘোষের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসানের সঞ্চালনায় এই সম্মেলন উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার। প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।

লিটন আরও বলেন, ‘জিয়াউর রহমান কী করেছিলেন সেই ইতিহাস আমরা সবাই জানি। আকস্মিকভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর স্বাধীনতা হুমকির মধ্যে পড়ে। বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান করার জন্য সারা দেশে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর নিদারুণ অত্যাচার জিয়াউরের নেতৃত্বে বাংলাদেশ একের পর এক শুরু হয়। মানুষকে নির্যাতন-গুম করে ফেলাসহ কত অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর।’

মহানগর ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির দায়িত্ব বিষয়ে তিনি বলেন, ২০১৪ সালে এই কমিটি হয়েছিল। সেই সময় জাতীয় নির্বাচন নস্যাৎ করতে চেয়েছিল বিএনপি-জামায়াত। গণতন্ত্র রক্ষায় শেখ হাসিনা সফলভাবে সেই নির্বাচন করেছিলেন। ২০১৫ সালে বিএনপি-জামায়াত-শিবির প্রায় এক বছর আগুন সন্ত্রাস করে মানুষকে পুড়িয়েছে, রেললাইন জ্বালিয়েছে, অজস্র গাছ কেটেছে, ব্রিজ ভেঙে দিয়েছে। ধ্বংসাত্মক সেই সময়ে এই কমিটি শক্ত হাতে নেতৃত্ব দিয়েছে। এই নেতৃত্ব রাজশাহীতে সব ছাত্রলীগকে নিয়ে জামায়াত-বিএনপির আগুন সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করেছিল।

তিনি আরও বলেন, ‘এই রাজশাহী কলেজে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ হওয়া ছাত্রলীগ দুলাল শুয়ে আছে, শত সরল ছাত্রলীগ প্রাণ দিয়েছে। তারা যেন শান্তি পায় এ রকম কমিটি দিতে হবে। তোমরাই তো আগামী দিনের সাংসদ, মন্ত্রী, মেয়র, চেয়ারম্যান হবে। কাজেই সঠিক নেতৃত্ব বেছে নিতে হবে।’

সম্মেলনে ডাবলু সরকার বলেন, আগামী দিনের ছাত্রলীগ এমন হবে যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে, শেখ হাসিনার উন্নয়নকে জনগণের কাছে পৌঁছে দেবে। আগামী দিনে রাজশাহীর ছাত্রলীগে যে নেতৃত্ব আসবে, সেখানে কোনো অনুপ্রবেশকারী যেন ঠাঁই না পায়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে।

লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘নেতৃত্ব নিয়ে অনেক সমালোচনা-আলোচনা হয়। রাজশাহী মহানগরকে এমন কোনো নেতৃত্ব উপহার দেব না, যে নেতৃত্বের মাধ্যমে এই নগরের ঐতিহ্য নষ্ট হবে। এমন কোনো প্রশ্নবিদ্ধ নেতৃত্বও দেওয়া হবে না, যারা নিজের স্বার্থ বাস্তবায়ন করবে। এখানে এমন নেতৃত্ব দেওয়া হবে, যারা এই নগরে ইতিহাস-ঐতিহ্যকে ধারণ করবে এবং এই কমিটি হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রোল মডেল।’

সম্মেলন সূত্রে জানা গেছে, ছাত্রলীগের সম্মেলন ঘিরে সভাপতি পদে তিনটি, সাধারণ সম্পাদক পদে ১৩টিসহ মোট ১৬টি সিভি পড়েছে। সম্মেলন রাজশাহীতে হলেও কমিটি ঢাকা থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে।

এর আগে ২০১৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। সেবার রকি কুমার ঘোষকে সভাপতি, মাহমুদ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে পাঁচজনসহ মোট ১৬১ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।