Thank you for trying Sticky AMP!!

জোঁকের ভয়ে ধান কাটতে রাজি হচ্ছেন না শ্রমিকেরা

জোঁকের কারণে বিশেষ পাজামা পরে ধান কাটছেন চাষিরা। গত শুক্রবার সখীপুর উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামে। ছবি: প্রথম আলো

টাঙ্গাইলের সখীপুরে ধানখেতে জোঁক থাকায় ভয়ে ধান কাটতে রাজি হচ্ছেন না শ্রমিকেরা। ফলে পাকা ধান জমিতেই ঝরে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় পলিথিনের বা বিশেষভাবে তৈরি পাজামা পরে অনেক শ্রমিক ধান কাটছেন।

উপজেলার কাকড়াজান ইউনিয়নের গোটা এলাকা ও কালিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে জোঁকের এই আক্রমণ দেখা যাচ্ছে।

চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ১৭ হাজার হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু কাকড়াজান ইউনিয়নে রয়েছে ২ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমি। ধানের ফলন মোটামুটি হলেও শুধু কাকড়াজান ইউনিয়নে জোঁকের কারণে কৃষকেরা তাঁদের পাকা ধান কাটাতে পারছেন না। চড়া মজুরি দিতে চাইলেও জোঁকের ভয়ে ধান কাটতে নামতে চাইছেন না শ্রমিকেরা।

কাকড়াজান ইউনিয়নের হামিদপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক জানান, ইরি-বোরো ধানের খেতে হাজার হাজার জোঁক কিলবিল করছে। শ্রমিকেরা ধান কাটতে নামলেই দুই পায়ে আক্রমণ করে বসে জোঁক। এসব জোঁক পা বেয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে উঠে আক্রমণ করে। জোঁকের ভয়ে শ্রমিকেরা ধান কাটতে সাহস পাচ্ছেন না। ফলে পাকা ধান এখন জমিতেই ঝরে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ থেকেও জোঁকের আক্রমণ ঠেকাতে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না বলে তাঁরা অভিযোগ করেন।

হামিদপুর গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন বলেন, গত বছর ৪০০ টাকা হারে শ্রমিক খাটিয়েছিলেন। কিন্তু এবার জোঁকের কারণে ৬০০ টাকা মজুরিতেও ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। চড়া দাম দিয়েও শ্রমিক না পাওয়ায় অনেক জমির মালিক দুই পা পলিথিন–জাতীয় কাপড় দিয়ে পাজামা বানিয়ে ধান কাটছেন।

উপজেলার কালিয়া ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের কৃষক আবদুর রহিম গত বৃহস্পতিবার সখীপুর মোখতার ফোয়ারার শ্রমিকের হাট থেকে পাঁচজন শ্রমিক আনেন ৭০০ টাকা মজুরি দেওয়ার কথা বলে। তাঁদের অটোরিকশাযোগে ধানখেতে নিয়ে যান। কিন্তু মাত্র ১০ মিনিট ধান কাটার পরই তাঁরা ধান না কেটে চলে যান। জোঁকের আক্রমণে কোনো শ্রমিক কাজ করতে সাহস পাননি।

হঠাৎ করে ফসলি জমিতে জোঁকের প্রকোপ বাড়ার কারণ হিসেবে মাঠের সরকারি খালগুলো ভরাট হওয়াকেই দায়ী করছেন কৃষকেরা। কাকড়াজান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়নের সব খাল-নালা ভরাট হয়ে যাওয়ায় জোঁক জমিতে এসেছে। খাল দিয়ে পানি যাওয়া-আসার ব্যবস্থা থাকলে জোঁকের এত প্রকোপ থাকত না। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ধান কাটার আগে খেতে চুন ব্যবহার করলে জোঁক মারা যায়। তবে এটা কৃষকের জন্য বাড়তি ব্যয়। এ ছাড়া জমিতে ধান কাটার সময় কৃষকেরা পায়ে ডামবুট অথবা পলিথিন মুড়িয়ে নিলে জোঁকের আক্রমণ থেকে কিছুটা রক্ষা পাওয়া যায়।