Thank you for trying Sticky AMP!!

জ্যোৎস্নার ঘরে বিদ্যুতের আলো

প্রতীকী ছবি

জ্যোৎস্নার ঘরে খাবার, নতুন পোশাকের পর এবার এল আলো। বিদ্যুতের আলোতে আলোকিত তাদের ঘর। করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই মহামারির সময় ভ্যানের ওপর জন্ম নেওয়া রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার নুরুল-মাহমুদা দম্পতির সন্তানেরই নাম জ্যোৎস্না।

বাগমারা উপজেলার বাসুপাড়া ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলামের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মাহমুদা খাতুনের ৯ এপ্রিল প্রসববেদনা ওঠে। হাসপাতাল ভর্তি না নেওয়াতে ভ্যানের ওপর কন্যাসন্তান প্রসব করেন তিনি। মা-বাবা সন্তানের নাম রাখেন জ্যোৎস্না। করোনা পরিস্থিতিতে নুরুল ইসলাম বেকার হয়ে পড়েন। পরিবারে অভাব দেখা দেয়। এ নিয়ে ১৪ এপ্রিল প্রথম আলোর অনলাইনে ‘করোনাকালে ভ্যানে জন্মানো পরিবারে আনন্দ নেই’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। পরদিন নুরুল-মাহমুদা দম্পতির বাড়িতে ছুটে যান বাগমারার ইউএনও শরিফ আহম্মেদ। তিনি চাল, ডাল, তেল, মরিচ ও নগদ টাকা দেন। এ ছাড়া পরিবারটির পাশে থাকার অঙ্গীকার করেন।

নুরুল-মাহমুদা দম্পতি এ সময় তাঁদের বাড়িতে বিদ্যুৎ–সংযোগ না থাকার বিষয়টিও ইউএনওকে জানান। দাপ্তরিক ও স্থানীয় জটিলতার কারণে বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হয়নি বলে জানান। বিদ্যুৎ না থাকায় বিভিন্ন সমস্যার কথাও জানান। তখন ইউএনও দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন। তাঁর আশ্বাসের এক দিন পরেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁদের বাড়িতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়। এখন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত তাঁদের বাড়ি।

প্রশাসন ছাড়াও পরিবারটির সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন স্থানীয় যুবদল নেতা আরিফুল ইসলাম, কৃষক লীগ নেতা এনামুল হক, শিক্ষক হেলাল উদ্দিনসহ বিভিন্ন সংগঠন। তাঁরা চাল, ডাল, সবজি, নগদ অর্থ ছাড়াও নবজাতকের নতুন পোশাক দেন। এর আগে পোশাক না থাকায় নবজাতক জ্যোৎস্নাকে ছেঁড়া কাপড়ে মোড়ানো হয়েছিল।

মাহমুদা খাতুন বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় কেরোসিনের বাতির আলোয় থাকতে হয়েছিল। তেল ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় সন্ধ্যার পরেই বাতি নিভিয়ে শিশুসন্তান নিয়ে শুয়ে পড়তেন। এখন পরিবারে খাবার এসেছে, আলোও এসেছে।

নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১–এর বাগমারা আঞ্চলিক দপ্তরের মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) সুলতান আহম্মেদ বলেন, ইউএনওর নির্দেশ পাওয়ার পরেই বাড়িটিতে বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে দাপ্তরিক নয়, স্থানীয় সমস্যার কারণে এত দিন বিদ্যুৎ–সংযোগ দেওয়া হয়নি।

ইউএনও শরিফ আহম্মেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা রয়েছে বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার। এরপর কেউ অন্ধকারে থাকবে, তা হতে পারে না। পরিবারটির অসহায়ত্ব দেখে এবং প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়নের জন্য স্থানীয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে দ্রুত সংযোগ দেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল।