Thank you for trying Sticky AMP!!

ঢাকার বুকে 'টাইটানিক', এসেছে 'মেসি' ও 'বস'

নাম টাইটানিক। বিশাল ধড়। হেলেদুলে এল। তবে জলরাশিতে নয়, বালুর আঙিনায়। আঙিনায় পা পড়তেই তার চারদিকে উৎসুক জনতার ভিড়। অনেকে ক্যামেরা নিয়ে টাইটানিকের ছবি তুলতে ব্যস্ত। কারণ, টাইটানিক তো বেশি দিন থাকবে না। শিগগিরই বিক্রি হয়ে যাবে। 

ঢাকা জেলার ধামরাই থেকে টাইটানিককে আনা হয়েছে। রাখা হয়েছে মোহাম্মদুপরের সাদিক অ্যাগ্রো ফার্ম নামের একটি খামারে। সাদিক অ্যাগ্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, এবারের কোরবানি ঈদ উপলক্ষে সারা দেশের মধ্যে টাইটানিকই সবচেয়ে বড় গরু।

সাদিক অ্যাগ্রো খামারের থাকা গরুটির নাম ‘টাইটানিক’। ওজন ১৫শ কেজি। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ১৮ জুলাই। ছবি: আবদুস সালাম

আকারে বড় ও নজরকাড়া গরুটিকে বেশ আদরযত্নে রাখা হচ্ছে। তিনবেলা খাবার। খাবারে থাকছে ঘাস, দানাদার ভুসি, লেবু, খড়, ঘাস। এসব খাবার একেবারে নিয়ম করে খাওয়ানো হয়। খাবার দিয়েই আদরযত্নের পর্ব শেষ হয় না। ঝকঝকে তকতকে রাখার জন্য টাইটানিককে তিনবেলা গোসল করানো হয়। দুজন লোক সব সময় এটির দেখভাল করেন।

সাদিক অ্যাগ্রোর দায়িত্ব থাকা মো. মাইদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, টাইটানিক হলো এবারের ঈদে দেশের সবচেয়ে বড় গরু।

গরুটির বিশেষত্ব কী?
জানতে চাইলে মাইদুল ইসলাম জানান, টাইটানিক খুব শান্ত স্বভাবের গরু। ওর কোনো রাগ নেই। কারও দিকে তেড়েও আসে না। এর উচ্চতা ৭ ফুট। লম্বায় ১০ ফুটের মতো হবে। ওজন ১ হাজার ৫০০ কেজি।

বিজ্ঞাপনের জন্য টাইটানিকের ছবি তোলা হচ্ছে। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ১৮ জুলাই। ছবি: আবদুস সালাম

জানা গেছে, টাইটানিকের বয়স পাঁচ বছর। বছরখানেক আগে ফ্রিজিয়ান জাতের গরু টাইটানিককে কিনেছিল সাদিক অ্যাগ্রো। বিরাট বিশাল টাইটানিকের দাম চাওয়া হচ্ছে ২৮ লাখ টাকা।

‘টাইটানিক’ নাম দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে খামার কর্তৃপক্ষ জানায়, নামকরণ হলে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ সহজেই করা যায়। তাই গরুটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘টাইটানিক’।

নজরকাড়ার জন্য সাদিক অ্যাগ্রো ফার্মে আরও অনেক বিশাল আকৃতির গরু আনা হয়েছে। এর মধ্যে একটি নাম ‘মেসি’। মেসির রং বাদামি। উচ্চতা ৬ ফুটের বেশি। লম্বায় ৮ ফুট। বয়স সাড়ে তিন বছর। ওজন ১ হাজার ২০০ কেজি। গরুটি ব্রাহমা জাতের। এর দাম হাঁকা হচ্ছে ৩৫ লাখ টাকা। ব্রাহমা জাতের আরেকটি গরুর নাম ‘বস’। বসের বয়স চার বছর। ধূসর সাদা গরুটির ওজন ১ হাজার ৩০০ কেজির মতো। এর দাম চাওয়া হচ্ছে ৪৫ লাখ টাকা।

ব্রাহমা জাতের এই গরুর নাম ‘বস’। গরুটির ওজন সাড়ে ১৩ শ কেজি। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ১৮ জুলাই। ছবি: আবদুস সালাম

এবারের কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সাদিক অ্যাগ্রো থেকে প্রায় দুই হাজার গরু বিক্রি করা হবে। এ ছাড়া আশপাশের আরও অনেকে খামারের প্রচুর গরু এনে রাখা হয়েছে। কোরবানির ঈদের আরও তিন সপ্তাহের বেশি সময় বাকি। তবে এখনই জমজমাট হয়ে উঠেছে এসব খামার। শামিয়ানা টানিয়ে রাখা হচ্ছে এসব খামারে। পশুর বেচাকেনাও অল্পস্বল্প হচ্ছে প্রতিদিন। ঢাকা ও ঢাকার বাইরের জেলা থেকে ক্রেতারা আসছেন। তবে ক্রেতারা রাতের দিকে এসে গরু দেখে যাচ্ছেন। পছন্দ ও দামে মিললে কিছু টাকা দিয়ে বুকিং করে যাচ্ছেন গরু। ঈদের আগে বাকি টাকা পরিশোধ করে গরু নিয়ে যাওয়ার সুযোগও রয়েছে। অবশ্য তুলনামূলক বড় আকৃতির গরু রয়েছে মোহাম্মদপুরের এসব খামারে। ছোট গরু তুলনায় কম।

লাল রঙের এই গরুটি নাম ‘মেসি’। ওজন ১২ শ কেজি। মোহাম্মদপুর, ঢাকা, ১৮ জুলাই। ছবি: আবদুস সালাম

চট্টগ্রাম থেকে আসা আমির চৌধুরী নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘এখানে ওজন করে গরু বিক্রি হয়। আবার দরদাম করারও সুযোগ রয়েছে। আগে এসে গরু দেখব। পছন্দ হলে টাকা দিয়ে বায়না করব। সুবিধাজনক সময়ে গরু বাড়ি নিয়ে যাব। যাতায়াত খরচ দিলে গরু এখান থেকেই পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে।’

পুরান ঢাকা থেকে আসা ইলিয়াস হোসেন বলেন, ‘আমাদের যৌথ পরিবার। বড় সাইজের দুটি গরু কোরবানি দিয়ে থাকি। আগে এসে বাজারের অবস্থা যাচাই করছি। মনমতো হলে কিনব। তা না হলে হাটের জন্য অপেক্ষা করব।’