Thank you for trying Sticky AMP!!

তারাগঞ্জে হাটবাজারে উপচে পড়া ভিড়

রংপুরের তারাগঞ্জ হাটের হাঁস-মুরগির বাজারে মানুষের উপচে পড়া ভিড়। সামাজিক দূরত্ব না মেনে চলছে কেনাবেচা। তারাগঞ্জ বাজার, ১৯ এপ্রিল

করোনাঝুঁকি এড়াতে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার প্রধান সড়কগুলো ফাঁকা থাকলেও অলিগলি ও পাড়ার মোড়ে ভিড় কমছে না। দুপুরের পরই মানুষের ভিড় বাড়ছে হাটবাজারে। শারীরিক দূরত্ব না মেনে পাশাপাশি বসে বা দাঁড়িয়ে আড্ডা চলছে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ১৮টি হাটবাজার রয়েছে। গত চার দিনে উপজেলার ইকরচালী, বালাবাড়ি, মাঝেরহাট, ডাঙ্গীরহাট, কাশিয়াবাড়ি, বুড়িরহাট, কাজীরহাটসহ অন্তত সাতটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, মানুষ করোনাভাইরাসের ব্যাপারে তেমন সচেতন নন। বাজারগুলোতে মাছ, মাংস, কাঁচা তরিতরকারি, হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল কেনাকাটার সময় ক্রেতাদের মধ্যে নিরাপদ দূরত্ব বজায় থাকছে না। অনেকেই ব্যবহার করছেন না মাস্ক। পাড়ার মোড়ে মোড়ে দল বেঁধে আড্ডা দিচ্ছেন তরুণেরা। তবে উপজেলা সদরের মানুষের মধ্যে এ বিষয়ে সচেতনতা দেখা গেছে।

সোমবার বেলা দেড়টার দিকে তারাগঞ্জ হাটের কাঁচাবাজারে দেখা গেছে ক্রেতাদের ভিড়। গা ঘেঁষে বাজার করছেন তাঁরা। বেশির ভাগ ক্রেতার মুখে মাস্ক নেই। বাজার করতে আসা ইকরচালী গ্রামের মোশারফ হোসেন বলেন, ‘মাস্ক পরলেও তো মোর নিশ্বাস বন্ধ হয়। এ ছাড়া হামরা তো কৃষক মানুষ লাল রোইদোত কাম করি খাই। হামার করোনা হওয়ার চান্স নাই। এইগল্যা রোগ তো বাহে শহরোত। হামার গ্রামোত নাই।’

ওই হাটের হাঁস–মুরগির বাজারেও গিজগিজ করছে মানুষ। কেউ দরদাম করছেন, কেউ গুনছেন টাকা। আবার কেউ কেনাকাটা করে বাড়িতে ফিরছেন। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। কারও মুখে মাস্ক থাকলে, তা থুতনিতে নামানো।

হাটে বাজার করতে আসা কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সবার চলাচল করা উচিত। কিন্তু কেউ তা মানছেন না। স্বাভাবিক সময়ের মতো সবাই চলাফেরা করছেন। গা ঘেঁষে এসে হাঁস–মুরগি, শাকসবজি কিনছেন।

বেলা আড়াইটার দিকে মাংস বাজারে গিয়ে দেখা গেল, দুই শতাধিক মানুষের জটলা। একে অপরের সঙ্গে গায়ে গা লাগিয়ে মাংস কেনাকাটা করছেন। মাংস কিনে বাড়ি ফিরছেন পলাশবাড়ি গ্রামের মকছুদার হোসেন। তিনি বলেন, ‘দেশোত করোনা রোগী বাড়োছে। মানুষও মরছে। কিন্তুক হাটবাজারোত তো ভিড় আগের মতোই হওছে। মাংস বাজারোত হুড়াহুড়ি করি মাংস কিনোছে।’

মাংস বিক্রেতা সাইদুর রহমান বলেন, ‘ভাইজান, করোনা শুরুর আগোত মাংসের বাজারোত যেমন ভিড় আছলো। এলাও তেমনি ভিড়। মাস্ক ছাড়াই মাংসের বাজারোত মানুষ আইসোছে। কেনাকাটা করি যাওছে। হামরা মাস্ক পরির কইলেও কায়ও কানোত নেওছে না।’

জানতে চাইলে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফারুক আহম্মেদ বলেন, মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে। অপ্রয়োজনে কাউকে বাইরে ঘুরতে দেখা গেলে বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

ইউএনও আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ এড়াতে ঘরে থাকার বিকল্প নেই। এই রোগ প্রতিরোধে সবাইকে সচেতন হতে হবে। ইতিমধ্যে বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি, সম্পাদককে ডেকে ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দোকান ছাড়া বাজারের অন্য দোকান বন্ধ রাখতে বলেছি। মাইকিংও করা হয়েছে। এরপরও কেউ ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দোকান ছাড়া অন্য দোকান খুললে বা হাটবাজারের মোড়ে বসে আড্ডা দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’