Thank you for trying Sticky AMP!!

দমদমা সেতুতে ফাটল, ধস রোধে বালুর বস্তা

রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে ঘাঘট নদের ওপর নির্মিত দমদমা সেতুতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ধসে পড়ার আশঙ্কায় সেতুর নিচে বালুর বস্তা দিয়ে সেতুটি রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি দিয়ে এখন ঝুঁকি নিয়ে যান চলাচল করছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে দুই বছর আগে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়।

রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও নীলফামারী—এই সাত জেলা এবং দুটি স্থলবন্দর বুড়িমারী ও বাংলাবান্দার সঙ্গে সারা দেশের সড়কপথে যোগাযোগ হয় দমদমা সেতু দিয়ে। এই সেতুর ওপর দিয়ে প্রতিদিন দুই হাজার যাত্রীবাহী বাস ও পণ্য পরিবহনের ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। সেতুটির উত্তর প্রান্ত রংপুর সিটি করপোরেশন ও দক্ষিণ প্রান্ত মিঠাপুকুর উপজেলার অন্তর্গত।

রংপুর সওজ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে দমদমা সেতুটি বোমা মেরে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। এরপর ১৯৭২ সালে সেটি নতুন করে নির্মাণ করা হয়। এ সেতুটি ৬০ মিটার দীর্ঘ ও ২০ মিটার প্রশস্ত।

এই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলে ঝুঁকি কমাতে ও যেকোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কায় সড়ক ও জনপথ বিভাগ সেতুর নিচে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দিয়েছে গত বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে। এদিকে গত ঈদুল আজহার রাতে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে আবারও সংস্কার করা হয়েছে।

গতকাল রোববার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর নিচে উত্তর প্রান্তে চারটি গার্ডারের মধ্যে একটি গার্ডারে ফাটল দেখা দিয়েছে। তাই ধস ঠেকাতে মাটি থেকে সেতুর তল পর্যন্ত পুরোটাই বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেওয়া হয়েছে। মাটির মধ্যে সিমেন্ট দিয়ে ঢালাইও দেওয়া হয়, যাতে ভিতটা শক্ত হয়। ফলে সেতুর ওপর দিয়ে গাড়ি চলাচল করলেও শিগগিরই ধসে পড়বে না বলে সওজ বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। যানবাহন চলাচলের সময় সেতুটি কেঁপে ওঠে।

সংশ্লিষ্ট বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, গত বছরের মার্চ মাসে দরপত্রের মাধ্যমে সেতুর নিচে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেওয়ার কাজটি করা হয়েছে। প্রায় আড়াই হাজার বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেওয়া হয়েছে।    

এই সেতুর ওপর দিয়ে রড বহনকারী আট চাকার ভারী ট্রাকের চালক নুরুল ইসলাম বলেন, এই সেতুর ওপর ট্রাক ওঠামাত্র দুলতে থাকে। এ সময় গাড়ি খুব ধীরগতিতে চালাতে হয়। 

ঢাকা থেকে রংপুরগামী হানিফ পরিবহনের একটি বাসের চালক খুরশিদ আলম বলেন, ‘অনেক দিন ধরে সেতুটি দোলাদুলি করে। শুনছি, সেতুটার নিচে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেওয়া হয়েছে। তার ওপর গাড়ি ধীরে ও সাবধানে চালাই।’ 

রংপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, সেতুটি অনেক পুরোনো। অনেক বেশি যানবাহন চলাচল করে বলে সেতুটি চাপ নিতে পারছে না। ফলে একটি গার্ডারে ক্র্যাক (ফাটল) দেখা দিয়েছে। সেতু বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে বালুর বস্তা দিয়ে ঠেস দেওয়া হচ্ছে। এতে করে সেতুটি ভেঙে পড়লেও বালুর বস্তায় আটকে যাবে। ঈদের রাতেও যানবাহন চলাচল বন্ধ রেখে সেতুটির সংস্কারকাজ করা হয়েছে।

শফিকুজ্জামান আরও বলেন, ইতিমধ্যে মহাসড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে কাজ শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সে সময় এখানে নতুন করে সেতু নির্মাণ করা হবে।