Thank you for trying Sticky AMP!!

দরিদ্রদের জন্য দরিদ্র মুক্তিযোদ্ধার ত্যাগ

আবদুল কুদ্দুস দরিদ্র মানুষ। দৈনিক ১০০ টাকা হাজিরায় পৌরসভা কার্যালয়ে পিয়নের কাজ করেন। পাশাপাশি প্রতি মাসে ১২ হাজার টাকা করে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পান। তিন মাসের ভাতার টাকা জমিয়েছিলেন নিজের ভাঙা ঘরটি মেরামতের জন্য। কিন্তু অনাহারে থাকা মানুষের কষ্ট দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারেননি। ঘর মেরামতের পুরো ৩৬ হাজার টাকা প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দান করে দিলেন। 

আবদুল কুদ্দুস (৬০) পাবনার বেড়া পৌর এলাকার নতুনপাড়া মহল্লার বাসিন্দা। শুক্রবার বিকেলে বাড়ির কাছে শহীদ আবদুল খালেক স্টেডিয়ামে কর্মহীন মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম চলতে দেখেন। ওই সময় সেখানে গিয়ে স্থানীয় সাংসদ শামসুল হক টুকু ও ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকীর হাতে জমানো টাকা তুলে দেন তিনি।

আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘ঘর আমি পরেও দিব্যার পারব। তা ছাড়া আমি নিজেও কমবেশি খাওয়া পাত্যাছি। কিন্তু এখন দ্যাশের ম্যালা মানুষের প্যাটে ভাত নাই। এসব মানুষের আগে বাঁচা দরকার। তাই টাকা কয়ডা প্রধানমন্ত্রী বরাবর পাঠায়া দিল্যাম।’

দরিদ্র এই মুক্তিযোদ্ধা জানান, প্রায় ২১ বছর ধরে তিনি নামমাত্র পারিশ্রমিকে বেড়া পৌরসভায় অস্থায়ী ভিত্তিতে পিয়নের পদে কাজ করছেন। বর্তমানে তাঁর পারিশ্রমিক কিছুটা বেড়ে দৈনিক ১০০ টাকা হয়েছে। এই টাকা ও মুক্তিযোদ্ধার ভাতা বাবদ প্রতি মাসে যে টাকা পান, তাই দিয়ে কোনো রকমে তাঁর সংসার চলে। তাঁর দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। আর ছেলেদের মধ্যে এক ছেলে মাছ ধরার কাজ এবং অন্য ছেলে গরু বিক্রির সময় মধ্যস্থতাকারীর কাজ করেন।

এ বিষয়ে ইউএনও আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল কুদ্দুস প্রকৃতপক্ষেই মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন। তাঁর এমন কর্মকাণ্ডে আমরা অভিভূত। আগামীকাল শনিবার তাঁর দান করা ৩৬ হাজার টাকা ডিসি স্যারের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পাঠানো হবে।’