Thank you for trying Sticky AMP!!

দিনমজুরের প্রতিবাদে ধরা পড়ল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন দিনমজুর ফরিদ। ছবি: কল্যাণ প্রসূন

সড়ক ঢালাইয়ের কাজে এক বস্তা সিমেন্টের সঙ্গে ছয় টুকরি পাথর ও তিন টুকরি করে বালু দেওয়ার কথা। কিন্তু তিন টুকরির বদলে বালু দেওয়া হচ্ছিল ৮-১০ টুকরি। একপর্যায়ে সন্দেহ হলে কাজে বাধা দেন এক দিনমজুর। পরে কাজ তদারকির দায়িত্বে থাকা সড়ক বিভাগের কর্মকর্তা গিয়ে দেখেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকেরা কাজে অনিয়ম করছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে মৌলভীবাজারের জুড়ী-বটুলি শুল্ক স্টেশন সড়কের উপজেলা সদরের কামিনীগঞ্জ বাজার এলাকায়। অনিয়মের বিপক্ষে প্রতিবাদ করা সেই দিনমজুরের নাম ফরিদ আলী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের আওতাধীন ওই সড়কের বিজিবি ক্যাম্পের সামনে থেকে কামিনীগঞ্জ বাজার কণ্ঠিনালা সেতু পর্যন্ত ৪৫০ মিটার এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে ধাপে ধাপে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ চলছে। বুধবার সকালে কাজ চলাকালীন অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি শুরু হয় ফরিদের। ফরিদ দাবি করেন, নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ বালু দেওয়া হচ্ছে। এ সময় উপস্থিত লোকজনকে তিনি বিষয়টি যাচাই করে দেখার অনুরোধ জানান। সড়কটির নির্মাণকাজ দেখভাল করছেন সওজ অধিদপ্তরের কার্য সহকারী জাকির হোসেন চৌধুরী। পরে তিনি ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন, নিয়ম অমান্য করে বেশি পরিমাণ বালু দেওয়া হচ্ছে। একপর্যায়ে নিজেদের ভুল স্বীকার করে নেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকেরা।

ফরিদ বলেন, ‘আমি রোজ কামলা মানুষ। মেশিনে (মিশ্রণযন্ত্র) কখনো আট, কখনো নয়, আবার কখনো দশ টুকরি করে বালু দেওয়া হচ্ছিল। সন্দেহ হওয়ায় কাজে আপত্তি দেই। মানুষও আমারে সমর্থন দিছে। পরে জানলাম, আমি ঠিকই ধরছি। মিক্সিং ঠিকমতো না হইলে কয়েক দিন পরে তো রাস্তা নষ্ট হই যাইব।’

স্থানীয় বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘আমিও ঘটনাস্থলে ছিলাম। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন তাঁদের ভুল স্বীকার করেছেন। ফরিদ সাহসী কাজ করেছেন। অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে এভাবেই মানুষকে জেগে উঠতে হবে।’

সওজ অধিদপ্তরের কার্য সহকারী জাকির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত শ্রমিকেরা সিমেন্ট, পাথর ও বালুর মিশ্রণের অনুপাত সঠিক রাখেননি। পরে সব ঠিকঠাক হয়ে গেছে।

সড়কটির নির্মাণকাজের দায়িত্বে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওয়াহিদ কনস্ট্রাকশনের সাইট ব্যবস্থাপক মো. হাসান প্রথম আলোকে বলেন, মিশ্রণযন্ত্র পরিচালনার দায়িত্বে থাকা শ্রমিকদের ভুলের কারণে এ সমস্যা ঘটেছে। সড়কের আর কোনো স্থানে এ ধরনের সমস্যা ঘটেনি।