Thank you for trying Sticky AMP!!

প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতেই বোনকে কুপিয়ে হত্যা

প্রতীকী ছবি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে গোষ্ঠীগত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করেন তাঁর বড় ভাই মুছা মিয়া। ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুজন আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এসব কথা বলেন।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (নাসিরনগর) আদালতে দুই আসামি হত্যার সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হোসাইন তাঁদের জবানবন্দি নথিভুক্ত করেন।

পুলিশ সূত্র জানায়, নাসিরনগর উপজেলায় দুই বছর আগে রাফিজা খাতুন (৩০) নামের ওই নারী হত্যার শিকার হন। গত সোমবার রাফিজা হত্যায় জড়িত সন্দেহে উপজেলার রামপুর গ্রামের সোহাগ মিয়া (২৫), আক্কাছ মিয়া (৪৫) ও পরশ মিয়াকে (৪৫) আটক করে জেলার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআইয়ের পরিদর্শক ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, আক্কাছ ও পরশ আদালতে হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।

আদালতে দুজনের স্বীকারোক্তি দেওয়ার আগে মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে জেলা পিবিআই কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন ও পরিদর্শক গোলাম কিবরিয়া ঘটনার বর্ণনা দেন।

পুলিশ কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন ও গোলাম কিবরিয়া বলেন, উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের মুছা মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে একই গ্রামের আবু কালামের গোষ্ঠীগত নানা বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। একটি খাসজমি দখল নিয়ে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এরপর প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ওই দিনই বোন রাফিজাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন মুছা। তাঁকে সহযোগিতা করেন মুছার ভাই মোবারক হোসেন, সৎভাই সোহাগ মিয়া, ভগ্নিপতি জয়নাল মিয়া এবং আত্মীয় পরশ মিয়া, আক্কাছ মিয়াসহ আরও কয়েকজন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, হত্যার ঘটনার দুই বছর আগেই স্বামীর সঙ্গে রাফিজার বিবাহবিচ্ছেদ হয়। ঘটনার দিন (২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাফিজাকে ঘরের পেছন থেকে টেনেহিঁচড়ে মুছার বাড়ির আঙিনায় নেওয়া হয়। সেখানে দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে রাফিজাকে হত্যা করা হয়। পরে মুছা নিজেই বাদী হয়ে ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি প্রতিপক্ষের ৫৭ জনের বিরুদ্ধে নাসিরনগর থানায় হত্যা মামলা করেন।

এসপি শাখাওয়াত হোসেন বলেন, তদন্তের একপর্যায়ে পিবিআইয়ের সদস্যরা গত সোমবার অভিযান চালিয়ে নাসিরনগরের রামপুরা থেকে আক্কাছ মিয়া (৪৫), ঢাকার ভাটারা এলাকা থেকে মুছার সৎভাই সোহাগ মিয়া (২৫) ও নারায়ণগঞ্জের সানারপাড় এলাকা থেকে পরশ মিয়াকে (৪৫) আটক করেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা তিনজনই রফিজাকে হত্যার সঙ্গে নিজেদের জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন।