Thank you for trying Sticky AMP!!

দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু

দুই দিন পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। তবে ফেরি চালুর খবর জানা না থাকায় গত কয়েক দিনের তুলনায় যাত্রীর চাপ কম ছিল। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। ছবি: এম রাশেদুল হক

দুই দিন বন্ধ থাকার পর রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে গণপরিবহন ছাড়া সব ধরনের গাড়ি পারাপার হচ্ছে। তবে পুনরায় ফেরি চালুর খবর অনেকে না জানায় আজ শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীদের তেমন চাপ দেখা যায়নি।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয় জানায়, যে যেখানে আছেন, সেখানে ঈদ করার নির্দেশনা থাকায় দফায় দফায় ফেরি বন্ধ রাখা হয়। আবার নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে ঘূর্ণিঝড় আম্পানে জানমালের নিরাপত্তার স্বার্থে বুধবার থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত ফেরি বন্ধ রাখতে বলা হয়। তবে বুধবার দুপুরে মুমূর্ষু রোগী ও করোনার নমুনা পাঠাতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ছোট একটি ফেরি ছাড়ে। বেলা তিনটার দিকে ফেরিটি পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসার সময় ঈদে ঘরমুখী কয়েক হাজার যাত্রী নিয়ে দৌলতদিয়ায় পৌঁছালে পুলিশ ফেরিটি ফিরিয়ে দেয়। এতে ফেরিতে থাকা যাত্রী ও দুটি অ্যাম্বুলেন্সের রোগীসহ স্বজনরা চরম বিপাকে পড়েন। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে পুনরায় ফেরি চালুর নির্দেশ এলে ফেরি ছাড়ে।

ঘাটসংশ্লিষ্ট মানুষদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল রাত ১১টার পর ফেরি চালু হলে উভয় ঘাটে আটকে থাকা কয়েক শ গাড়ি ও কয়েক হাজার যাত্রী দ্রুত নদী পাড়ি দেয়। বিশেষ করে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি ফেরিতে ঈদে ঘরমুখী মানুষের ব্যাপক ভিড় ছিল। এ সময় কোনো ফেরিতেই সামাজিক দূরত্ব বজায় বা স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো বালাই ছিল না।

আজ শুক্রবার দুপুরের আগ পর্যন্ত দৌলতদিয়ায় দেখা যায়, আটকে থাকা অধিকাংশ গাড়ি নদী পাড়ি দিয়ে চলে গেছে। পুনরায় ফেরি চালু হওয়ার খবর অনেকের জানা না থাকায় দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে যাত্রীদের তেমন চাপ ছিল না। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় বিভিন্ন উপায়ে দৌলতদিয়া ঘাটে আসা যাত্রীরা সহজেই ফেরিতে উঠছে। দুই-তিনটি যে গাড়ি পাচ্ছে, তাই নিয়ে ফেরি ছেড়ে যাচ্ছে।

বিপগোয়ালন্দর সোনালী হ্যাচারিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সিদ্দিক মুন্সী বলেন, গতকাল গোয়ালন্দ থেকে লক্ষাধিক পোলট্রির বাচ্চা গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, ময়মনসিংহ উত্তরাঞ্চলে পাঠানোর কথা ছিল। ফেরি বন্ধ থাকায় মহাবিপাকে পড়েন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফেরি চালুর খবর পেয়ে বাচ্চাবোঝাই গাড়ি ছেড়ে যায়। এ সময় পাটুরিয়া থেকে আসা প্রতিটি ফেরিতে মানুষের ভিড় দেখেন।

সাভার থেকে অনেক কষ্টে বাড়ি ফিরছিলেন রাজবাড়ীর মো. স্বপন। চার ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে পাটুরিয়া আসতে। নদী পাড়ি দিয়ে তিনি বলেন, লকডাউনে দোকান বন্ধ থাকায় তিন দিন আগে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে আটকা পড়েন। সকালে ফেরি চালু হওয়ার খবর পেয়ে রওনা দেন। কোনো গাড়ি না পাওয়ায় আসতে অনেক কষ্ট হয়েছে।

বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ফেরির দ্বিতীয় মাস্টার রুমান সরকার বলেন, ‘আমরা অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। কয়েক দিন হাজার হাজার মানুষ ফেরিতে আসা–যাওয়া করেছে। অথচ আমাদের সুরক্ষায় কোনো ব্যবস্থা নেই।’ তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে পন্টুন ছিঁড়ে যাওয়ার উপক্রম হলে বুধবার রাতভর ফেরির ইঞ্জিন চালু রেখে পন্টুন ধরে রাখতে হয়েছে। পরদিন গতকাল মধ্যরাত থেকে সব ফেরি চালুর নির্দেশনা এলে আবার যাত্রী ও যানবাহন পারাপার শুরু করেন।

বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ফেরি চালুর নির্দেশনা এলে ১৪টি ফেরি চালু করা হয়। উভয় ঘাটে আটকে থাকা সব গাড়ি আজ সকাল ১০টার মধ্যে পারাপার শেষ হলে ফেরি কমিয়ে আনা হয়। গাড়ির চাপ বাড়লে পুনরায় ফেরি বাড়ানো হবে। গণপরিবহন ছাড়া সব ধরনের গাড়ি পারাপার হচ্ছে।