দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ১১ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু
রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে ঘন কুয়াশার কারণে তৃতীয় দফায় ১১ ঘণ্টার মতো ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এর আগে দুই দফায় দুই দিনে আরও ১২ ঘণ্টার মতো ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। এতে উভয় ঘাটে কয়েক শ যানবাহন আটকে পড়ায় যাত্রী ও চালকেরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আবদুল্লাহ জানান, গতকাল সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই নদী অববাহিকায় কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকলে ফেরিচালকেরা উভয় ঘাট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান। পরে কর্তৃপক্ষ দুর্ঘটনা এড়াতে রাত ১১টার আগেই ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়। ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে কুয়াশা কম দেখে কর্তৃপক্ষ ফেরি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এর আগে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে ১১টি ফেরি দৌলতদিয়া ঘাটের কাছে নোঙর করে থাকতে বাধ্য হয়। ফেরি বন্ধের কারণে উভয় ঘাটে মহাসড়কে কয়েক কিলোমিটারে যানজট সৃষ্টি হয়। এতে দুর্ভোগের কবলে পড়েন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।
আজ সকালে দৌলতদিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ছোট-বড় মিলে ১১টি ফেরি ঘাটে নোঙর করে আছে। কিছু ফেরিতে যানবাহন উঠছে, কিছু খালি বসে আছে। ঘাট থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার গাড়ির সারি। এতে আগের দিন আসা ঢাকাগামী যাত্রীবাহী নৈশ কোচ, পচনশীল দ্রব্যের পণ্যবাহী গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের গাড়ি রয়েছে।
ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন বাগেরহাটের সিরাজ আল মামুন। তিনি বলেন, গতকাল রাত দুইটার দিকে ইউনিক পরিবহনে ঘাটে এসে যানজটে আটকা পড়ে আছি। আমাদের মতো আরও অনেকেই ঘাটে আটকে রয়েছে। এ ছাড়া সারা রাত আটকে থাকায় এখানে শৌচাগারের সমস্যা, খাবারেও সমস্যা রয়েছে। দোকান থেকে বেশি দামে খাবার কিনতে হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থেকে আসা পূর্বাশা পরিবহনের বাসচালক আসাদুজ্জামান বলেন, গতকাল রাত ৮টায় চুয়াডাঙ্গা থেকে রওনা দিয়ে ১১টার দিকে ফেরিঘাটে পৌঁছে জানতে পারি ফেরি বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে ঘাটে আটকে আছি। সারা রাত বাসের মধ্যে বসে থেকে সময় পার করছি। যাত্রীরাও রাত জেগে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নারী যাত্রীদের টয়লেটে যাওয়াসহ নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
এ বিষয়ে দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোন্নাফ মোল্লা বলেন, ফেরিঘাটে আটকে থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ হয়েছে। তবে কেউ যাতে কুয়াশার মধ্যে ট্রলারে নদী পাড়ি দিতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য নৌপুলিশ সর্বদা ব্যস্ত ছিল।
চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে ফেরি চলাচল শুরু
আমাদের প্রতিনিধি,চাঁদপুর জানান, চাঁদপুর-শরীয়তপুর নৌপথে ১১ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটা থেকে আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ থাকে। কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর আকাশ পরিষ্কার হলে বেলা ১১টায় চাঁদপুর হরিণা ফেরিঘাট থেকে করবী ও কুমারী নামের দুটি ফেরি শরীয়তপুরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
বিআইডব্লিউটিসির চাঁদপুর হরিণাঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফয়সাল আহমেদ জানান, কুয়াশার কারণে নৌ-দুর্ঘটনার আশঙ্কায় এ নৌপথে ফেরি চলাচল ১১ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। এ কারণে দুই পারে সাময়িক কিছু গাড়ির জট লাগে।