Thank you for trying Sticky AMP!!

সারা বছর অযত্ন-অবহেলায় পড়ে ছিল শহীদ মিনার। ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শুরু হয়েছে ধোয়ামোছা ও সংস্কারের কাজ। গতকাল ঠাকুরগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে

ধোয়ামোছা শুধু এক দিনের জন্য

শহীদ মিনারে সারা দিনই জুতা-স্যান্ডেল পরে বিভিন্ন বয়সী মানুষের আড্ডা বসে। কেউ কেউ বেদিতে বসে ধূমপানও করে।

বছরে শুধু একটি দিন। ২১ ফেব্রুয়ারি এলেই শুরু হয় শহীদ মিনার ধোয়ামোছা ও সংস্কারের কাজ। প্রতিবছর এভাবেই চলে। অথচ বছরের বাকি সময়টায় শহীদ মিনার পড়ে থাকে অযত্ন-অবহেলায়। আগামীকাল রোববার মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। দিনটি ঘিরে ঠাকুরগাঁওয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ধোয়ামোছা শুরু হয়ে গেছে।

ধোয়ামোছার কাজ বাস্তবায়ন করছে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা। গতকাল শুক্রবার সকাল ১০টায় শহীদ মিনার এলাকায় গিয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের তোড়জোড় দেখা যায়। বেদিতে ব্রাশ দিয়ে ঘষে ঘষে তোলা হচ্ছিল সারা বছর ধরে জমা ধুলা। সেখানে কথা হয় বাঘা দাস নামের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর সঙ্গে। তিনি জানান, দুই দিন ধরে এ কাজ করছেন তাঁরা। বেদি থেকে ধুলা-মাটির আস্তরণ ঘষে তুলে পানি দিয়ে ধোয়া হয়েছে। বাঘা বলেন, সারা বছরে জমা ধুলার স্তর পরিষ্কার করতে বেশ খাটনি লাগে।

কথা হয় ওসমান আলী (৫২) নামের শহীদ মিনার এলাকার এক বাদাম বিক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, শহীদ মিনারে সারা দিনই জুতা-স্যান্ডেল পরে মানুষ আড্ডা দেয়। কেউ কেউ বেদিতে বসে ধূমপান করে।

সম্প্রতি শহীদ মিনারের পাশের সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় জুতা-স্যান্ডেল পরে বেদিতে কয়েকজনকে আড্ডা দিতে দেখেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম। এরপর তিনি শহীদ মিনারের সিঁড়িতে লিখে দেন, ‘জুতা পরে ওঠা নিষেধ’। কিছুদিন পর কেউ আর সে নির্দেশনা না মানলে শহীদ মিনারের চারপাশে বাঁশের খুঁটির সঙ্গে দড়ি বেঁধে ঘিরে দেওয়া হয়।

ওসি তানভিরুল ইসলাম বলেন, বছরের এক দিন শহীদ মিনারে ফুল দিলেই ভাষাশহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়ে গেল; বিষয়টি এমন নয়। সারা বছরই শহীদদের সম্মান ও মিনারের পবিত্রতা রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে। শহীদদের সম্মান ও মিনারের পবিত্রতা রক্ষায় লোকজনকেও সচেতন করতে হবে।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আকবর হোসেন বলেন, এই শহীদ মিনার তো শুধু একটি দিবসকে কেন্দ্র করে তৈরি হয়নি। সারা বছর অবহেলায় রেখে শুধু এক দিনের জন্য ধোয়ামোছা করলে শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা হয় না।

সাংস্কৃতিক কর্মী অমল কুমার বলেন, সারা বছরই শহীদ মিনারের অযত্ন চোখে পড়ে। মূল বেদি ও মিনারের আশপাশে আবর্জনা পড়ে থাকে।

শহীদ মিনারের পরিচ্ছন্নতার কাজ বাস্তবায়ন করা ঠাকুরগাঁও পৌরসভার মেয়র মির্জা ফয়সল আমীনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল ধরেননি। কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী বেলাল হোসেন বলেন, সারা বছর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করার মতো লোকবল পৌরসভার নেই। তাই বছরজুড়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও ধোয়ামোছার কাজ করা সম্ভব

হয় না। ২১ ফেব্রুয়ারি ঘিরে এসব কাজ বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।