Thank you for trying Sticky AMP!!

নবান্ন উৎসবে মাছের মেলা

কাতল মাছটির ওজন ১০ কেজি। বিক্রেতা মাছটির দাম হাঁকেন ১০ হাজার টাকা। ছবি: লেখক

ভোরের হিমে বগুড়ায় এখনই শীতের আমেজ। ঘন কুয়াশায় খানিক দূরের দৃশ্য ঝাপসা। এর মধ্যেই বগুড়া উথলী গ্রামে মোকামতলা-জয়পুরহাট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশ থেকে মাইকে ভেসে আসছিল, ‘এই বড় বড় মাছ, নদীর মাছ। খুব স্বাদের মাছ। ১০ কেজির কাতলা মাছ।’ সেখানে নবান্ন উৎসব উপলক্ষে আজ সোমবার দিনব্যাপী মাছের মেলা বসেছে।

প্রতিবছর আশপাশের রথবাড়ি, বেড়া বালা, গরীবপুর, মোকামতলা, ছোট ও বড় নারায়ণপুর, রহবলসহ ১২ থেকে ১৫টি গ্রামে এই মেলাকে ঘিরে উৎসব লেগে যায়। মানুষ বড় বড় মাছ ও নতুন সবজি কিনে মেয়েজামাইসহ স্বজনদের আপ্যায়ন করে থাকেন।

আঞ্চলিক সড়ক থেকে নেমে ইট বিছানো পথ পার হলেই মাছের পসরা ঘিরে প্রচুর মানুষের জটলা। এ রকম প্রায় ৫০টি মাছের পসরা বসেছে মেলায়। মানুষের ভিড়ে পা ফেলাই দায়। ক্রেতারা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী মাছ কিনছেন।

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার উথলী গ্রামে বসেছে মাছের মেলা। ছবি: লেখক

মেলা প্রাঙ্গণে পরেশ চন্দ্র মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, সনাতন পঞ্জিকা অনুসারে অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে এই মেলা শুরু হয়। মেলায় নতুন নতুন জিনিস বিক্রি হয়। মেলা থেকে মাছ কেনা এই অঞ্চলের রীতিতে পরিণত হয়েছে।

এই মাছটির ওজন ১৫ কেজি। ছবি: লেখক

মেলার পাশের গ্রাম গরীবপুরে বেড়াতে এসেছেন স্বপ্না বেগম। সেখান থেকে স্বামীকে নিয়ে মাছের মেলায় ঘুরতে এসেছেন। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘মেলাটির নাম আগেই শুনেছি, কিন্তু আসা হয়নি কখনো। মেলায় এসে বড় বড় মাছ দেখছি। অনেক আনন্দ লাগছে।’ ঘুরেফিরে মেলা থেকে স্বাদ ও সাধ্যের কথা মাথায় রেখে পছন্দের মাছটি কিনবেন বলে জানান তিনি।

আট কেজি ওজনের মাছ হাতে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা। ছবি: লেখক

এক দিনের এই মেলায় নদীর মাছের পাশাপাশি পুকুরের মাছও বিক্রি হয়। উথলি গ্রামসহ জয়পুরহাটের বিভিন্ন গ্রামের পুকুরে বছরজুড়ে বড় প্রজাতির মাছের চাষ করেন চাষিরা। মেলার দিন পুকুর থেকে মাছ তুলে বিক্রি করেন তাঁরা।

চার কেজি ওজনের চিতল মাছটি ২৬০০ টাকায় কিনেছেন তাজুল ইসলাম। ছবি: লেখক

মেলার ইজারাদার ওমর ফারুক মণ্ডল জানান, এক দিনের এই মেলায় ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকার মাছ বিক্রি হয়। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই মেলা।