Thank you for trying Sticky AMP!!

নাটোরে দিনে ১০ জনের বেশি কোভিড আক্রান্ত

করোনাভাইরাস। ছবি: রয়টার্স

দেশের ৬২ জেলায় যখন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছিল, তখনো নাটোর ছিল সংক্রমণ মুক্ত। অথচ গত ২৮ এপ্রিল থেকে প্রথম ১০০ রোগী শনাক্ত হয় ৫০ দিনে। এর পরের ১০০ রোগী শনাক্ত হয় ১৪ দিনে। সবশেষ মাত্র ১০ দিনে ১০৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। অর্থাৎ সবশেষ নমুনা পরীক্ষার ফল হিসাবে ওই ১০ দিনে প্রতিদিন ১০ জনের বেশি সংক্রমিত হয়েছেন।

স্বাস্থ্যবিধি ও কোয়ারেন্টিন না মানার কারণে নাটোরে সংক্রমণ দ্রুত বাড়ছে বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় জানিয়েছে।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়ার পর ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত নাটোরে কারও শরীরে ভাইরাসটির সংক্রমণ শনাক্ত হয়নি। অন্য জেলা থেকে আসা ব্যক্তিদের মাধ্যমে নাটোরে সংক্রমণ ছড়ায়। ২৮ এপ্রিল প্রথম একসঙ্গে আটজনের শনাক্ত হয়। পরবর্তী ৫০ দিনে রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ১০১। পরের ১০০ জন শনাক্ত হন মাত্র ১৪ দিনে (১৮ জুন পর্যন্ত)।

লকডাউন উঠে যাওয়ার পর পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি ঘটে। পরের ১০৪ জন রোগী শনাক্ত হতে মাত্র ১০ দিন (১২ জুলাই পর্যন্ত) সময় লাগে। গত দুই দিনে নমুনার ফলাফল না আসায় ১২ জুলাই পর্যন্ত জেলায় মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩০৫। সবশেষ নমুনা পরীক্ষায় মেডিকেল কলেজের এক ছাত্রীসহ ১১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

১০ দিনে ১০৪ জন রোগী শনাক্ত হওয়ার কারণ জানতে চাইলে সিভিল সার্জন কাজী মিজানুর রহমান জানান, অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে চাইছেন না। যাঁরা নমুনা দিচ্ছেন, তাঁদের তাৎক্ষণিক হোম কোয়ারেন্টিনে থাকা বাধ্যতামূলক। অথচ তাঁরা নমুনা দেওয়ার পর যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কর্মস্থলে যোগ দিচ্ছেন। পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে স্বাভাবিক মেলামেশা করছেন। পাঁচ-সাত দিন পর যখন তাঁদের ‘পজিটিভ’ ফল আসছে, ততক্ষণে অন্যরাও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে পড়ছেন।

সিভিল সার্জন জানান, এই মুহূর্তে নমুনা দেওয়া ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করা না গেলে নাটোরের আরও বহু মানুষ সংক্রমিত হয়ে পড়বেন।

এ ব্যাপারে জেলার পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান, নাটোরে পিসিআর ল্যাবরেটরি না থাকায় অন্যত্র নমুনা পাঠানোর দীর্ঘদিন পর ফলাফল আসছে। কখনো কখনো ১৪ দিনের বেশি সময় লাগছে। ফলে নমুনা দেওয়া ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে রাখা মুশকিল হচ্ছে। এ জন্য সবার আগে পিসিআর ল্যাবরেটরি স্থাপন জরুরি হয়ে পড়েছে। এখন থেকে নমুনা দেওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

জেলা প্রশাসক মো.শাহরিয়াজ জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) তৎপর রয়েছেন। এ কারণে নাটোরের একজন ইউএনও ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান বাড়িয়ে প্রশাসনের অন্যদের আরও তৎপর করা হচ্ছে। তবে সবার আগে স্থানীয় লোকজনকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।