Thank you for trying Sticky AMP!!

নাটোর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটিকে ‘অবৈধ’ বললেন আগের নেতারা

প্রায় ২৪ বছর পর কেন্দ্র অনুমোদিত নাটোর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটিকে ‘অবৈধ’ ও ‘পকেট কমিটি’ হিসেবে দাবি করেছেন সদ্য বিলুপ্ত হওয়া জেলা কমিটির নেতারা।

শনিবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। পাশাপাশি নতুন কমিটি বাতিল করে সম্মেলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুনরায় কমিটি করারও দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান নাটোর জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম সরকার ও যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদ সেলিম। লিখিত বক্তব্যে তাঁরা বলেন, ২০ জুলাই রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নতুন কমিটির তালিকা প্রকাশ হয়। তালিকায় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদকে (ডলার) সভাপতি ও মো. শফিউল আযমকে (স্বপন) সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আরিফুল ইসলামের দাবি, খন্দকার ইশতিয়াক আহমেদ রাজাকার পরিবারের সন্তান এবং শফিউল আযম একজন মাদকসম্রাটের সহোদর। তাঁদের গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেখা যায়নি।

আরিফুল ইসলাম সরকারের দাবি, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সংগঠনের গঠনতন্ত্রের ১৫ (ক) ধারার বিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে। সম্মেলন ছাড়া ঢাকায় বসে পকেট কমিটি করার কোনো এখতিয়ার তাদের নেই। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ভুল বুঝিয়ে কোনো কিছুর বিনিময়ে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। নাটোরের স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা-কর্মীরা এই কমিটি মানেন না, মানবেন না। তিনি অবিলম্বে নতুন কমিটি বিলুপ্ত করে সম্মেলন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুনরায় কমিটি গঠনের দাবি জানান। এ বিষয়ে তিনি সাংগঠনিক নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে সদ্য ঘোষিত নতুন কমিটির সহসভাপতি মলয় কুমার রায় ও বুলবুল আহমেদকে দেখা গেলেও আয়োজকদের দাবি, ওই কমিটির অন্তত ছয়জন সহসভাপতি তাঁদের সঙ্গে আছেন। ১৯৯৭ সালে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন হওয়ার পর ২৪ বছরেও কেন সম্মেলন করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেনি—আয়োজকেরা জানতে চাইলে বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আহমেদ সেলিম বলেন, ‘আমরা বহুবার সম্মেলন করার প্রস্তুতি নিয়েছি, তারিখও ঘোষণা করেছি। কিন্তু স্থানীয় ও জাতীয় কিছু সমস্যার কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারিনি।'

কেন্দ্রীয় কমিটি আহ্বায়ক কমিটিকে বিলুপ্ত করার পরও আগের কমিটির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন ডাকার কারণ জানতে চাইলে আহমেদ সেলিম বলেন, কেন্দ্রীয় কমিটি আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করার এখতিয়ার রাখে না। এ ছাড়া নতুন কমিটিকে তাঁরা মেনে নেননি। তাই তাঁদের কমিটি বহাল আছে বলে তাঁরা মনে করেন।

স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভেদের কারণে নতুন কমিটি সৃষ্টি হয়েছে কি না, জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তারুল ইসলাম আলম বলেন, নাটোরে আওয়ামী লীগে কোনো বিভেদ নেই। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছেন। তবে দলের কিছু উচ্ছৃঙ্খল নেতা নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অনৈক্যের কথা বলে বেড়াচ্ছেন।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, এই ষড়যন্ত্রকারীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ। তবে জুনাইদ আহমেদ এ অভিযোগকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক দিলীপ কুমার দাস, জেলা যুবলীগের সভাপতি বাসিরুর রহমান খান চৌধুরী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তারুল ইসলাম আলম প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নতুন কমিটির সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘পদ-পদবি না পেয়ে বিলুপ্ত কমিটির কেউ কেউ কেন্দ্র অনুমোদিত কমিটির বিরোধিতা করছেন। আমি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলাম, এন এস সরকারি কলেজের ভিপি ছিলাম এবং বর্তমানে দলীয় সমর্থন নিয়ে নাটোর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছি। আমি রাজাকারের সন্তান হলে এত পদ পাওয়া সম্ভব ছিল না।’

সাধারণ সম্পাদক শফিউল আযম বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কে সংবাদ সম্মেলনে মানহানিকর বক্তব্য দেওয়া হয়েছে। আমরা আয়োজকদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নেব।’