Thank you for trying Sticky AMP!!

নার্সের বদলে টিকা দিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান, ছবি-ভিডিও ভাইরাল

তিনজনের শরীরে করোনার টিকা দিয়ে দেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান

সারা দেশের মতো আজ রোববার কুষ্টিয়ার বিভিন্ন উপজেলায় করোনার টিকা দেওয়া শুরু হয়। সকাল থেকে এই কার্যক্রম চলে বিকেল পর্যন্ত। কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রশিক্ষিত নার্স পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেও তিনজনের শরীরে করোনার টিকা দিয়ে দিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান। তাঁর এই টিকা পুশের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

প্রশিক্ষিত নার্সের বদলে একজন জনপ্রতিনিধির টিকা দেওয়ার বিষয়কে খুবই ভয়ানক বলে দাবি করেছেন চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট কয়েকজন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তাঁরা বলেন, দক্ষ নার্স, চিকিৎসক বা চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট অনুমোদিত ব্যক্তি ছাড়া কেউ এটা পুশ করতে পারেন না।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিকেলে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই তিনি (উপজেলা চেয়ারম্যান) করতে পারেন না। করোনা টিকা দেওয়ার জন্য নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তাঁরাই টিকা প্রদান করতে পারেন। অন্য কারও টিকা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’

তিনজনের শরীরে করোনার টিকা দিয়ে দেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আজ বেলা ১১টার দিকে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে করোনা টিকা দেওয়া শুরু হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বেচ্ছাসেবকেরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সিরিঞ্জ হাতে নিয়ে তিনজনের শরীরে টিকা দেন আবদুল মান্নান খান। নার্স ও চিকিৎসকেরা তাঁকে সহায়তা করেন। তিনজনকে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের টিকা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ৫৩ সেকেন্ডের একটি ভিডিওতে তাঁকে টিকা পুশ করতে দেখা যায়।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান যে তিনজনের শরীরে করোনার টিকা পুশ করেছেন তাঁরা হলেন কুমারখালী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মী মোখলেছুর রহমান ও স্থানীয় সাংবাদিক কে এম আর শাহীন।

এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আকুল উদ্দিন বলেন, ‘চেয়ারম্যান (আবদুল মান্নান খান) সিরিঞ্জ হাতে ধরে ছিলেন, পুশ করেননি। ভিডিওতে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে যে তিনি টিকা পুশ করছেন—এমন কথা বলার পর তিনি বলেন, ঘটনার সময় তিনি ওই কক্ষের বাইরে ছিলেন। বিষয়টি তাঁর জানা নেই।

বক্তব্য জানার জন্য আবদুল মান্নান খানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছ থেকে টিকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আমি ভয় পাচ্ছিলাম। অন্যদিকে তাকিয়ে ছিলাম। পরে শুনেছি উপজেলা চেয়ারম্যান টিকা পুশ করেছেন। চেয়ারম্যান না দিয়ে নার্স দিলেই ভালো হতো।’

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, সঠিকভাবে টিকা দেওয়া না হলে মাংশপেশির চারপাশে প্রদাহ দেখা দিতে পারে।