Thank you for trying Sticky AMP!!

নির্যাতনের অভিযোগে নড়াইল শিশু পরিবারের বাসিন্দাদের বিক্ষোভ

জেলা প্রশাসকের কাছে নিজেদের অভিযোগ তুলে ধরছেন নড়াইল সরকারি শিশু পরিবারের শিশুরা

নড়াইল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে এসে বিক্ষোভ করেছে সরকারি শিশু পরিবারের শিশুরা। তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের অভিযোগ এনে বিভিন্ন দাবিতে সোমবার সকাল আটটার দিকে তারা এ বিক্ষোভ করে। পরে জেলা প্রশাসক তাদের সঙ্গে কথা বলে অভিযোগ শোনেন। অভিযোগের তদন্তে কমিটি গঠন করেছে প্রশাসন।

নড়াইল সরকারি শিশু পরিবার সূত্র জানায়, বর্তমানে ৬৪ জন এতিম শিশু ভর্তি থাকলেও ৫৫ জন অবস্থান করছে। এখানে থেকে তারা আশপাশের বিভিন্ন প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে।

শিশুদের বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক ও সরকারি শিশু পরিবারের কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক রতন কুমার হালদার জানান, ওই বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইয়ারুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। এ ছাড়া শিশুদের অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক করে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

সরকারি শিশু পরিবারে গেলে এতিম শিশুরা অভিযোগ করে, গত রোববার রাত ১০টার দিকে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশু সোহান শিকদার অসুস্থ হয়ে পড়লে গেটে এসে অনেক ডাকাডাকি করলেও গেট খোলেননি দারোয়ান। এরপর ভাঙা জানালা দিয়ে বের হয়ে উপতত্ত্বাবধায়কের কাছে শিশুটিকে নিলে তারপর হাসপাতালে নেওয়া হয় তাকে। হঠাৎ রাত দুইটার দিকে পুলিশ এসে ঘুমন্ত শিশুদের ডেকে তোলে। এ সময় শিশু হাসিব, হুসাইন, প্রিন্স, তৌফিকসহ আরও কয়েকজনকে মারধর করে পুলিশ। কান ধরে ওঠবস করানো হয়। উপতত্ত্বাবধায়ক মো. আসাদুল্লাহ পুলিশ ডেকে এই অত্যাচার-নির্যাতন করেছেন। ওই উপতত্ত্বাবধায়ক এর আগেও পুলিশ দিয়ে মারধর করিয়েছেন। এর প্রতিবাদে এবং আরও দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে তারা।

শিশুরা জানায়, প্রায়ই তাদের ভয়ভীতি দেখানো হয়। তাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। গালিগালাজ করা হয়। কেউ রাতে অসুস্থ হলে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় না। খেলার সরঞ্জাম দেওয়া হয় না। তাদের দিয়ে ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করানো হয়। প্রায় প্রতিদিনই রাতে পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত খাবার খাওয়ানো হয়। তাদের জগ-গ্লাস শিক্ষকদের বাসায়, তারা পানি পান করে প্লেটে। ৩০টি ফ্যানের মধ্যে ৬-৭টি নষ্ট।

খাবারের ঠিকাদার তোফায়েল আহমেদ প্রথম অলোকে বলেন, সরকারি বাবুর্চি বেশ কিছুদিন ধরে নেই। একজন নারীকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে রান্না করানো হচ্ছে। দুপুরে রান্না করা খাবার রাতে দেওয়া হয়। তাই খাবারে সমস্যা একটু থাকতে পারে।
সোমবার দুপুরে উপতত্ত্বাবধায়ক মো. আসাদুল্লাহর বাসভবনে গিয়ে তাঁকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগের ব্যাপারে জানতে তাঁকে বারবার মুঠোফোনে কল দিলেও তিনি ধরেননি।

জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক রতন কুমার হালদার বলেন, শিশুরা উচ্ছৃঙ্খল আচরণ ও চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে। ওই শব্দে টহল পুলিশ এসেছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ আনা হয়েছিল। মারধর করা হয়নি। অন্য অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, ‘উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আরও কথা বলব। কীভাবে সমাধান করা যায়, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’