Thank you for trying Sticky AMP!!

নেত্রকোনায় বন্যায় ৮৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় নেত্রকোনায় বন্যার পানি বেড়েই চলছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আজ সোমবার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত জেলায় প্রায় ৮৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী।

জেলার ১০টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি বন্যা দেখা দিয়েছে কলমাকান্দা উপজেলায়। এই উপজেলায় অন্তত ৭০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। বাকি ১৫ হাজার পানিবন্দী মানুষ অন্যান্য উপজেলার।

এদিকে পাহাড়ি ঢলে গতকাল রোববার দুপুর থেকে হাওর এলাকা খালিয়াজুরি, মদন, মোহনগঞ্জে পানি বাড়ছে। তবে এসব এলাকার প্রধান নদ ধনু ও কংসের পানি বিপৎসীমার কিছুটা নিচে রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত চার দিনের টানাবৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কলমাকান্দার আটটি ইউনিয়নই বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। একইভাবে আংশিক প্লাবিত হয়েছে মদন, মোহনগঞ্জ, খালিয়াজুরি, দুর্গাপুর, বারাহট্টা উপজেলার বেশ কিছু এলাকা। কলমাকান্দায় দুই সপ্তাহ আগে প্রথম দফায় বন্যা দেখা দেয়। এরপর ধীরে ধীরে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। কিন্তু কয়েক দিনের টানাবর্ষণ ও উজানের ঢলে আবার পরিস্থিতির অবনতি হতে থাকে।

কলমাকান্দা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেক তালুকদার বলেন, কলমাকান্দায় বেশির ভাগ গ্রামই বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে। মানুষের বাড়িঘরে পানি ঢোকায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে তারা।

খালিয়াজুরি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ এম আরিফুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ি ঢলে গত রোববার থেকে হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে ছয়টি ইউনিয়নে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এর মধ্যে প্রায় শতাধিক মানুষ পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, সিদ্দিকুর রহমান বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, খালিয়াজুরি কলেজ, নগরের বাঘাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কিছু আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছেন।

জেলা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ আক্তারুজ্জামান বলেন, কলমাকান্দায় উব্দাখালি নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দুর্গাপুরের সোমেশ্বরী নদীর বিজয়পুর পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১৫ দশমিক ৮৯ মিটার। সেখানে পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১৫ দশমিক ২৫ মিটার। ওই নদীর দুর্গাপুর পয়েন্টে বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৫৫ মিটার। সেখানে বর্তমানে প্রবাহিত হচ্ছে ১২ দশমিক ৩৫ মিটার। কংস নদের জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমা ১০ দশমিক ৫৫ মিটার, সেখানে প্রবাহিত হচ্ছে ৯ দশমিক ৫৫ মিটার। আর খালিয়াজুরির ধনু নদের খালিয়াজুরি পয়েন্টে বিপৎসীমা ৭ দশমিক ১২ মিটার, সেখানে প্রবাহিত হচ্ছে ৬ দশমিক ৮৫ মিটার। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে পানি কমতে পারে বলেও জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, বন্যা নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসনের সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কিছু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে আসছে। তাদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেলায় ৪০০ মেট্রিক টন জিআর, জিআর বাবদ নগদ টাকা ৮ লাখ, শিশুখাদ্য ক্রয়ের জন্য ২ লাখ টাকা, গো-খাদ্য ক্রয়ে ২ লাখ ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।