Thank you for trying Sticky AMP!!

পর্যটনের বিকাশে আছেন তাঁরাও

পর্যটকদের জন্য ‘লেডি ট্রাভেলার্স অব সিলেট’– এর মতো বিভিন্ন গ্রুপ গড়ে উঠেছে। পর্যটন খাতকে এগিয়ে নিতে কাজ করছেন তাঁরা

সিলেটের পর্যটনের বিকাশে কয়েক বছর ধরে এগিয়ে এসেছেন কিছু তরুণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুককে কাজে লাগিয়ে অভ্যন্তরীণ পর্যটন বিকাশে কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা। সিলেটের স্থানীয় অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন ট্রাভেলার্স গ্রুপ এটি করে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস সংকটে বন্ধ থাকা দর্শনীয় স্থানগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর আবার এসব গ্রুপের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। পরিবেশের প্রতি দায়িত্বশীল আর দেশের পর্যটন খাত এগিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা।

‘সিলেটে নানা কারণে এখনো অনেক নারী স্বচ্ছন্দে ঘুরতে পারেন না। আমি নিজেও ঘুরতে পছন্দ করি। নিরাপত্তা কিংবা নানা কারণে পরিবারের সদস্যরাও বাইরে যাওয়ার জন্য নারীদের বেলায় উৎসাহটা খুব কম দেয়। একই সমস্যায় পড়েছিলাম আমিও।’ বলছিলেন ‘নারী ভ্রমণ দল’-এর অ্যাডমিন তনামী সুরভি। তিনি জানান, একদিন অনলাইনে ‘ট্রাভেলস অব বাংলাদেশ গ্রুপ’টির বিস্তারিত দেখে উৎসাহিত হয়ে তিনিও সিলেটে ২০১৬ সালে শুধু নারীদের ভ্রমণের জন্য ‘লেডি ট্রাভেলার্স অব সিলেট’ নামে অনলাইনে একটি গ্রুপ চালু করেন। এ গ্রুপের সদস্যসংখ্যা দুই শ। এ ছাড়া ‘লেডি ট্রাভেলার্স অব সিলেট ফ্যামিলি গ্রুপ’ও চালু করেন। সে গ্রুপের মাধ্যমে নারী ও একই পরিবারের পুরুষ সদস্যরা ভ্রমণে যেতে পারেন। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন দর্শনীয় ৪৭টি আয়োজনে পাঁচ শতাধিক পর্যটকদের সেবা দিয়েছেন সিলেটের এই গ্রুপ। তিনি জানান, নিরাপদে নারীদের দর্শনীয় স্থান দেখাতে কম খরচে ভ্রমণের একটি প্ল্যাটফর্ম মাত্র।

২০১৫ সালে অনলাইনে যাত্রা শুরু করা ‘ট্রাভেলার্স অব গ্রেটার সিলেট’ চালান শেখ রাফি নামের এক তরুণ। বন্ধুদের নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়াতেন নিয়মিত। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি ছেড়ে নেশাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন রাফি। তিনি বলেন, ‘সিলেটের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে বেশ নজর কেড়েছে। তা ছাড়া সিলেটে ভ্রমণপিপাসুদের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। সিলেটের দর্শনীয় স্থানগুলোকে প্রচার করার এটি একটি মাধ্যম হলেও এ থেকে মাসে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।’

পর্যটকদের পদচারণে সব সময় মুখর থাকে সিলেটের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র জাফলং। সৌন্দর্যের লীলাভূমি খ্যাত জাফলং করোনার ধাক্কা সামলে আবারও মুখর হয়ে উঠছে

রাফি আরও জানান, এ গ্রুপের প্রধান অ্যাডমিন তিনি। পর্যটকদের থাকা-খাওয়া ও যাতায়াতব্যবস্থা সবই আয়োজন করে থাকে এ গ্রুপ। সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে নিয়মিত ভ্রমণের আয়োজন করে থাকেন। ট্রিপগুলাতে নারী-পুরুষদের আলাদা থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা, অন্যান্য সেবা দেওয়া হয় প্যাকেজের মাধ্যমে। গ্রুপে বিস্তারিত জানিয়ে দেওয়া হয়।

সিলেটের সবচেয়ে বড় সাইক্লিস্টদের গ্রুপ ‘সিলেট সাইক্লিং কমিউনিটি’। এই দলের অন্যতম সাইক্লিস্ট মো. আলী কামাল জানান, সিলেটের নারী-পুরুষ সাইক্লিস্টরা প্রতিদিন কোনো না কোনো নতুন পর্যটনকেন্দ্রে যাচ্ছেন। ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেখানেই ছুটছেন পর্যটকেরা। একই সঙ্গে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে যাচ্ছেন তাঁরা। সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলো এভাবে বেশ পরিচিতি লাভ করছে। এতে স্থানীয় লোকজন লাভবান হচ্ছেন। সিলেটের পর্যটনকে প্রাকৃতিক আবহে গড়ে তোলা আর দূষণমুক্ত পরিবেশ মানেই আগামীর টেকসই পর্যটন—এ বার্তা তাঁরা নিয়মিত পৌঁছে দিচ্ছেন।