Thank you for trying Sticky AMP!!

পাটুরিয়ায় ভিড়, দৌলতদিয়া ফাঁকা

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তাতে থেমে নেই ঢাকা ছেড়ে গ্রামমুখী মানুষের ঢল। ফেরিতে করে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া দিয়ে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় পৌঁছান তাঁরা। ছবিটি আজ বৃহস্পতিবার সকালে তোলা। ছবি: প্রথম আলো

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারিভাবে ১০ দিনের ছুটি পেয়ে মানুষ এখন গ্রামে ছুটছেন। রাজধানী ছেড়ে আসা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীবোঝাই যানবাহন ও সাধারণ মানুষ মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে ভিড় করছেন। অন্যদিকে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে ঢাকামুখী যাত্রী তেমন না থাকায় যানবাহন ও মানুষের চাপ নেই রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ঘাটে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাতটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাটে অবস্থান করে দেখা যায়, পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ফেরি দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছে যানবাহন নামিয়ে দেওয়ার পর গাড়ির জন্য বসে আছে। মাঝেমধ্যে এক-দুটি গাড়ি যা পাচ্ছে, তাই নিয়ে ঘাট ছেড়ে যাচ্ছে। বিপরিত দিকে পাটুরিয়া ঘাটে আসা প্রতিটি ফেরিতে ভরপুর যানবাহন। সেই সঙ্গে আগের দিন বুধবার রাতে রওনা হওয়া অনেকে আসছেন। তবে গণপরিবহন–সংকট যাত্রীদের দুর্ভোগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। যে যা পাচ্ছে, তাতে চড়েই বাড়ি ফিরছেন।

দৌলতদিয়ার চারটি ঘাটে দেখা যায়, সারিবদ্ধভাবে ফেরিগুলো গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছে। এ সময় ঘাটে রো রো (বড়) ফেরি আমানত শাহ, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ হামীদুর রহমান, শাহ আলী, ইউলিটি ফেরি শাপলা শালুক, বনলতা, হাসনা হেনা, চন্দ্রমল্লিকাকে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ পর একটি কার্ভাড ভ্যান এলে পাঁচ নম্বর ঘাট থেকে আমানত শাহ নামের বড় ফেরিটি ওই কার্ভাড ভ্যান নিয়ে পাটুরিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এ ছাড়া বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান মাত্র তিনটি ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে ছেড়ে যায়। এভাবে এক-দুটি গাড়ি নিয়ে ফেরিগুলো ছেড়ে যাচ্ছে। বিপরীত দিকে পাটুরিয়া থেকে আসা প্রতিটি ফেরি গাড়ি ও যাত্রীতে ভরপুর।

ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অসুস্থ বাবা সুবল দাসের অস্ত্রোপচার শেষে কিছুটা সুস্থ হওয়ায় যশোরের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন মেয়ে পপি দাস। তিনি বলেন, ‘সবাই করোনা–আতঙ্কে বাড়ি চলে যাচ্ছে। তাই আমরাও দেরি না করে গতকাল বুধবার রাতে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছি। লোকাল বাসে পাটুরিয়ায় পৌঁছে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। সকালে ফেরিতে নদী পাড়ি দিয়ে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে দৌলতদিয়ায় পৌঁছালাম। এখান থেকে কীভাবে বাড়ি যাব, সে চিন্তাই করছি।’

ঢাকামুখী মানুষের চাপ নেই। যানবাহনের অপেক্ষায় ঘাটে বসে থাকছে ফেরি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে দৌলতদিয়া ফেরি ঘাট থেকে তোলা ছবি। ছবি: প্রথম আলো

সাভারের পাকিজা টেক্সটাইলের বস্ত্র প্রকৌশলী রাকিবুল হক দিনের ঝক্কি–ঝামেলা এড়াতে স্ত্রীকে নিয়ে গতকাল রাত নয়টার দিকে ব্যক্তিগত গাড়িতে করে রাজবাড়ীর উদ্দেশে রওনা হন। আজ সকালে তিনি বলেন, ঘাট এলাকায় মানুষের ঢল নামার চিত্র গণমাধ্যমে দেখার পর তিনি রাতে বাড়িতে রওনা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে সারা রাস্তায় যানজট থাকায় পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছে দীর্ঘ সময় বসে ছিলেন।

গতকাল রাত ১২টার দিকে সাভার থেকে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী আশিক কাজী ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার উদ্দেশে বের হন। সঙ্গে ছিলেন এক বন্ধু। দুজন লোকাল বাসে পাটুরিয়ায় পৌঁছান। নদী পাড়ি দিয়ে দৌলতদিয়ায় পৌঁছাতে সকাল আটটা বেজে যায়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক আবু আব্দুল্লাহ বলেন, বর্তমানে ১৪টির মধ্যে ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। টানা ১০ দিনের লম্বা ছুটি পেয়ে মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামের বাড়ির দিকে যাচ্ছেন। এ ছাড়া অধিকাংশ গণপরিবহন ও ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মানুষ বিকল্প উপায়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছেন। পাটুরিয়া ঘাটে ভিড় বেশি। অন্যদিকে, ঢাকাগামী গাড়ি নেই বললেই চলে। ফলে দৌলতদিয়া ঘাট যানবাহনশূন্য অবস্থায় আছে।