Thank you for trying Sticky AMP!!

পাহাড়ে বাঁশের নান্দনিক শিল্পকর্ম

বাঁশের সামগ্রী কিনছেন দুই নারী। সম্প্রতি খাগড়াছড়ির পানখাইয়াপাড়ায়। প্রথম আলো

বাঁশ দিয়ে নানা ধরনের নিত্যব্যবহার্য ও ঘর সাজানোর সামগ্রী তৈরি করেন বাবু মগ। এ কাজে তাঁর কোনো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। তবে নিজের ইচ্ছাশক্তির জোরে তিনি এসব সামগ্রী তৈরি করতে শিখেছেন।

১০ ডিসেম্বর সকালে খাগড়াছড়ি বাজার থেকে চার কিলোমিটার দূরে যৌথ খামার সাতভাইয়াপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, বাবু মগ বাড়ির উঠানে বাঁশ দিয়ে কারুকার্যখচিত চুড়ি তৈরি করছেন। ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে চায়ের কাপ, ট্রে, গ্লাস, মুখোশ, ফটোফ্রেম, চুড়ির আলনা, খাবারের বাটি, ল্যাম্পশেড, কলমদানি, ফুলের টব, হুঁকা ইত্যাদি। সব বাঁশের তৈরি। বাঁশের শিকড় দিয়েও তৈরি করে রেখেছেন জিরাফ, হাঁস, কুমির, হরিণসহ নানা শিল্পকর্ম।

১৭ বছর বিভিন্ন আসবাবের দোকানে কাজ করেছেন বাবু। তিন বছর আগে একদিন হাতে কোনো কাজ না থাকায় বাঁশ দিয়ে খেলাচ্ছলে মুখোশ তৈরি করেন। মুখোশটি বিক্রি করতে পারায় তিনি ভাবেন, বাঁশ দিয়ে কোনো কিছু বানিয়ে ব্যবসা হিসেবে নিলে মন্দ হবে না। কেননা, পাহাড়ে বাঁশের অভাব নেই। তা ছাড়া লোকজনের কাছে জানতে পারেন, এসব পণ্যের দামও মন্দ নয়। তবে প্রথম দিকে অনেক বাঁশ নষ্ট হলেও বর্তমানে হাত পাকিয়ে ফেলেছেন তিনি। এখন বাঁশ নষ্ট হয় কম। এ কাজে তাঁকে সাহায্য করেন তাঁর স্ত্রী নাজেইউ মগ। এ ছাড়া ইউটিউবে বাঁশের নতুন নতুন নকশা দেখেও শিখেছেন তিনি। এসব সামগ্রী ১০০–৫০০০ টাকায় বিক্রি করেন। তবে ফরমাশ পেলে বাঁশের সোফা, চেয়ার, আলনাসহ বিভিন্ন আসবাবও তৈরি করে দেন তিনি।

বাঁশের সামগ্রী তৈরি করার জন্য লাগে সিরিশ কাগজ আর নকশা করার জন্য গ্যাসের লাইট। মিতিংগা, ঢোল, মুলি—এই তিন ধরনের বাঁশ ব্যবহার করেন বাবু। গত বছর ডিসেম্বরে পানখাইয়াপাড়ায় এক হাজার টাকায় একটি দোকান ভাড়া নিয়েছেন তিনি।

খাগড়াছড়ি সদরের যৌথ খামার সাতভাইয়াপাড়ায় থাকেন বাবু মগ। পাহাড়ের ওপর বেড়া ও টিনের তৈরি তিনটি ঘরে স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে তাঁর বসবাস। তিনি বলেন, ‘সরকারিভাবে সহজ শর্তে ঋণ পেলে ব্যবসা কিছুটা বাড়াতে পারতাম।’