Thank you for trying Sticky AMP!!

পায়রা সেতুর দুই পাড়ের মানুষের উল্লাস

উদ্বোধনের পর বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে এলাকার লোকজন আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন। লেবুখালী, দুমকি উপজেলা, পটুয়াখালী, ২৪ অক্টোবর

পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী এলাকায় পায়রা নদীর ওপর নির্মিত পায়রা সেতু আজ রোববার উদ্বোধনের ঘোষণার পরই সেতুর দুই পাড়ে হাজার হাজার মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়েন। এর আগে জনতা বাদ্যযন্ত্র সহকারে উপস্থিত হন সেতুতে। সেখানে দল বেঁধে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠেন তাঁরা।

উদ্বোধনের পর মানুষের পাশাপাশি কিছু ছোট যানবাহন সেতু পেরিয়ে যায়। শুরুতে টোল ছাড়াই এসব যানবাহন সেতুর ওপর দিয়ে ছুটে চলে যায়। পরে দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে কুয়াকাটা থেকে বরিশালগামী ডলফিন পরিবহনের একটি বাস বরিশাল যাওয়ার পথে টোলঘরে এসে থামে এবং টোল পরিশোধ করে। এ সময় আল্লার দান পরিবহনের একটি বাসও টোল পরিশোধ করে বরিশাল থেকে কুয়াকাটা যায়।

Also Read: বহুপ্রতীক্ষিত পায়রা সেতুর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

ডলফিন পরিবহনের বাসচালক সাত্তার হাওলাদার বলেন, ‘ফেরিঘাটে অপেক্ষা ও গাড়ি নিয়ে ওঠা-নামাতে বেশ ভোগান্তিতে পড়তে হয়। এখন সেতু খুলে দেওয়া হয়েছে। দ্রুত সময়ে চলে যেতে পারব। খুব ভালো লাগছে। তবে বাসচালকেরা টোল বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে বলে মনে করছেন।’

টোল প্লাজার ব্যবস্থাপক এম এম আসাদুজ্জামান বলেন, ‘উদ্বোধনের পার টোল প্লাজা খুলে দেওয়ার পর অনেক গাড়ি আসছে। খুব ভালো লাগছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি তাঁরাও আনন্দিত।’

বাসের যাত্রী কুয়াকাটার মহিপুরের মাছ ব্যবসায়ী আবু তালেব বলেন, ভাই, প্রথম যাত্রী হয়ে বাসে সেতু পার হচ্ছি। এমনিতেই সেতুটি দেখতে খুব সুন্দর। এরপর পরিবারের সবাইকে নিয়ে একদিন সেতু দেখতে আসব।’

পায়রা সেতুতে যানবাহন চলাচল উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর সেতু দিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। লেবুখালী, দুমকি উপজেলা, পটুয়াখালী, ২৪ অক্টোবর

এদিকে উচ্ছ্বসিত মানুষের ঢল নামে সেতুতে। এলাকার শিক্ষার্থীরা দল বেঁধে সেতুটি দেখতে ছুটে যায়। এ সময় কথা হয়, দুমকি উপজেলার জনতা কলেজের বিএ শিক্ষার্থী কুলকুম সিকদারের সঙ্গে। তিনি তাঁর পাঁচ বন্ধু নিয়ে সেতু দেখতে যান। কুলসুম বলেন, ‘বাড়ির কাছে সেতু দীর্ঘদিন ধরে দূর থেকে দেখেছি। কিন্তু আজ সেতুর ওপর দিয়ে হেঁটে চলছি। সুন্দর, দৃষ্টিনন্দন সেতু এলাকার সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে। কী ভালো লাগছে, তা বলে বোঝাতে পারব না।’

পটুয়াখালীর বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান হাতে কয়েকটি রঙিন বেলুন নিয়ে পায়ে হেঁটে সেতু পার হচ্ছিলেন। প্রচণ্ড গরমে ঘাম ঝরছিল তাঁর শরীর থেকে। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে বলেছেন দৃষ্টিনন্দন সেতু। আসলেই সেতুটি দেখার মতো। এত সুন্দর সেতু এই অঞ্চলে আর হয়নি। শুধু সেতুটি দেখতেই পটুয়াখালী শহর থেকে এসেছি। গরমে কষ্ট হলেও খুব ভালো লাগছে। এই সেতু পেয়ে আমরা গর্বিত।’

Also Read: পায়রা সেতুতে খুলবে দক্ষিণের ভাগ্যের দুয়ার

পাশের বাউফল উপজেলার নওমালা থেকে সেতু দেখতে এসেছে দুই বন্ধু সোহেল ও শফিকুল। তারা এসএসসি পরীক্ষার্থী। সাইকেল চালিয়ে সেতু পার হয়ে ফিরে এসে হাঁপাতে হাঁপাতে তারা জানায়, দুই বন্ধু কথা দিয়েছিলাম সেতু উদ্বোধন হলেই দেখতে আসব। খুব সুন্দর সেতু, দেখতেও ভালো লাগছে।

পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) আসনের সাংসদ মো. মহিবুবুর রহমান বলেন, এই দৃষ্টিনন্দন পায়রা সেতু দক্ষিণাঞ্চলকে অর্থনৈতিকভাবে বদলে দেবে। বিশেষ করে এই সেতু খুলে দেওয়ার পর বরিশাল থেকে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ সৃষ্টি হবে। পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। দক্ষিণাঞ্চলের পায়রা সেতুসহ ব্যাপক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীকে পটুয়াখালীবাসীর পক্ষে ধন্যবাদ জানান তিনি।