Thank you for trying Sticky AMP!!

পিয়াসের স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল

স্কুলছাত্র পিয়াসের মৃতদেহ বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি। ছবি: মুক্তার হোসেন

পিয়াসের যমজ দুই বোন। একজন পাবনার সরকারি অ্যাডওয়ার্ড কলেজে ও অন্যজন নার্সিং ইনস্টিটিউটে পড়েন। নিজে স্কুলে পড়ত। বাবা দিন মজুর। টানাপোড়েনের সংসারে কিছুটা সহযোগিতা করার জন্য ধার করে একটা ধান মাড়াইয়ের যন্ত্র কিনেছিল। এটা দিয়ে ভাড়ায় ধান মাড়াই করছিল। আজ মঙ্গলবার সকালে সেই যন্ত্রের নিচে চাপা পড়ে পিয়াসের মৃত্যু হয়েছে।

মো. পিয়াস নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার জোনাইল ইউনিয়নের চামটা গ্রামের মো. খলিল হোসেনের ছেলে। সে জোনাইল এম এল উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

মো. খলিল হোসেন জানান, আজ ভোরে ধান মাড়াইয়ের জন্য বাপ বেটা উপজেলার ভিটা কাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সকাল পৌণে ছয়টার দিকে চামটা বিলের সেতুতে উঠছিল। এ সময় যন্ত্রটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কাত হয়ে পড়ে যায়। প্রাণ বাঁচাতে তারা লাফ দেন। তিনি বেঁচে গেলেও মাড়াইযন্ত্রটি পিয়াসের শরীরের ওপর পড়ে যায়। পরে পথচারীদের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শে দেওয়া হয়।

মো. পিয়াস

তাৎক্ষণিক তাকে নিয়ে রাজশাহীর উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছার আগে পথেই তার মৃত্যু হয়। তার মৃতদেহ নিয়ে বাড়িতে এলে স্বজনদের আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে আসে। নির্বাক বাবা শুধুই চেয়ে থাকে তাঁর সহযোগী মৃত ছেলের লাশের পানে।

বড়াইগ্রাম সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হারুণ অর রশিদ মো. পিয়াসের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ছোট্ট পিয়াস বোনদের লেখাপড়ার খরচ বহনে বাবাকে সহযোগিতার যে প্রচেষ্টা চালিয়েছিল তা সমাজে খুব কমই দেখা যায়। অকালে ছেলেটির মৃত্যুতে পরিবারটি অসহায় হয়ে পড়েছে। সমাজের বিত্তবানদের এই অসহায় পরিবারটির পাশে দাঁড়ানো উচিত। তিনিও এ প্রচেষ্টার অংশীদার হতে চান।