Thank you for trying Sticky AMP!!

পুনঃখননের পর ভাঙন, দেয়াল নির্মাণের দাবি

এই অবস্থায় এলাকাবাসী খালের উভয় তীরে দেয়াল ও সড়ক করার দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন।

খান পুনঃখননের পরও ভাঙনের কারণে বাড়িঘর, সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট পৌরসভার অশ্বদিয়া এলাকায়। সম্প্রতি তোলা

এলাকাবাসীর দাবির মুখে পুনঃখনন করা হয়েছিল কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার মেলা খাল। কিন্তু খালের পাড় বাঁধা (রিটেইনিং ওয়াল) হয়নি। ফলে ভাঙনে দিশেহারা দুই পাড়ের বাসিন্দারা। হুমকিতে রয়েছে বাড়িঘর, ফসলি জমি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এই অবস্থায় এলাকাবাসী খালের উভয় তীরে দেয়াল ও সড়ক করার দাবিতে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন।

নাঙ্গলকোট পৌরসভার অশ্বদিয়া গ্রাম ও উপজেলার মক্রবপুর ইউনিয়নের সাহেদাপুর গ্রামের মাঝখান দিয়ে মেলা খাল প্রবাহিত হয়ে ডাকাতিয়া নদীতে মিশেছে। বর্ষাকালে এই খাল পানিতে টইটম্বুর থাকে। বাকি সময়ে শুকিয়ে যায়। কোথাও কোথাও অল্পস্বল্প পানি থাকে। মেলা খালের প্রাণ ফেরানো এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি। এই অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) খালটি পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়। ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর পুরাতন ডাকাতিয়া-নতুন ডাকাতিয়া নদী সেচ ও নিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় এই কাজ শুরু হয়।

এলাকাবাসী বলছেন, পুনঃখনন করলেও খালের দুই পাড়ে রিটেইনিং ওয়াল করা হয়নি। খননের মাটি দিয়ে সড়ক তৈরির কাজও হয়নি। এই অবস্থায় ওই মাটি বিক্রি করে দেয় একটি অসাধু চক্র। তা ছাড়া খালের মধ্যে সেচের জন্য গভীর নলকূপ বা জলকপাট (স্লুইসগেট) বসানোর কাজও হয়নি। ফলে পুনঃখনন কোনো কাজে আসেনি। উল্টো খালের ভাঙনে বিপর্যস্ত এলাকার বহু পরিবার।

গত বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা গেছে মেলা খালের দুই পারে বিস্তীর্ণ এলাকায় ভাঙন। বেশির ভাগ ভাঙন গত বর্ষাকালের। এখনো ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। কারও ফসলি জমি খালে ভেঙে পড়েছে, কারও বাড়িঘর বিলীন হওয়ার পথে। কোথাও কোথাও ভাঙন চলে এসেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কাছে।

খালের দক্ষিণ পারে অশ্বদিয়া গ্রামের শাহজাহান-শামসুন্নাহার দম্পতির ঘর। শামসুন্নাহার বলেন, ‘বসতঘর রক্ষায় বর্ষা মৌসুমে অন্তত ১০০ বস্তা ইটের টুকরা ফেলেছি, কিন্তু কোনো লাভ হয়নি।’

এভাবে দুই পারের অন্তত ২৫টি বাড়িঘর খালে ভেঙে পড়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, রিটেইনিং ওয়াল না করলে বাড়িঘর, ফসলি জমি ও গাছগাছালি কিছুই রক্ষা পাবে না।

অশ্বদিয়া গ্রামের তাহফিজুল কোরআন নুরানী মাদ্রাসার সামনের সড়ক খালে ভেঙে পড়েছে। সড়ক রক্ষায় বাঁশের চাটাই দেওয়া হয়েছে। মাদ্রাসার শিক্ষক লকিয়ত উল্লাহ বলেন, বর্ষায় পানি থইথই করে। ঝুঁকি নিয়ে এখানে কয়েক শ শিশুশিক্ষার্থী পড়াশোনা করে।

এলাকাবাসীর পক্ষে অশ্বদিয়া গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক এ কে এম আবদুর রাজ্জাক গত বৃহস্পতিবার পাউবো, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও মেয়রের কাছে চিঠি দিয়েছেন। কুমিল্লা পাউবোর সদ্য বিদায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ বলেন, খাল খননের মাটি আশপাশের বাড়ির লোকজনই নিয়ে গেছেন। আর খালে বর্ষা মৌসুমে স্রোত বেশি থাকায় ভাঙন হয়েছে।

নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন কালু বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টির সমাধান করা হবে।