Thank you for trying Sticky AMP!!

পৃথিবীটাকে আবার সাজাব

>করোনাভাইরাস পাল্টে দিয়েছে আমাদের জীবনের বাস্তবতা। দেশ-বিদেশের পাঠকেরা এখানে লিখছেন তাঁদের এ সময়ের আনন্দ-বেদনাভরা দিনযাপনের মানবিক কাহিনি। আপনিও লিখুন। পাঠকের আরও লেখা দেখুন প্রথম আলো অনলাইনে। লেখা পাঠানোর ঠিকানা: dp@prothomalo.com

২০২০ সালটিকে খুব সুন্দর করেই স্বাগতম জানিয়েছিলাম। একপ্রকার টু ডু লিস্ট তৈরি করে রেখেছিলাম। লিখেছিলাম কীভাবে বছরটা কাজে লাগাব। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের এটা দ্বিতীয় বছর। তাই যা শেখার, এখনই শিখে নিতে হবে। এরপর হয়তো প্রয়োগের সময় চলে আসবে। কিন্তু করোনানামক এ মহামারির ভয়াল থাবায় যেন সবকিছু থমকে গেছে।

শুধু শেখার জন্যই নয়, দেশের, বিশেষ করে চট্টগ্রামের সব সুন্দর পাহাড়–পর্বত ও ঝরনা ঘুরে দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। সবকিছু যেন হঠাৎ করে থমকে গেল। প্রিয় ক্যাম্পাস, প্রিয় জায়গাগুলোর ছবি যখন দেখি, তখন যেন বুকের ভেতর হাহাকার শুরু হয়। কষ্ট হয় এই ভেবে যে এ জায়গায় আর ফিরে যাওয়া হবে কি না। প্রিয় মুখগুলোকে আর দেখা হবে কি না। করোনার এ ভয়াল থাবা অনেক প্রিয়জন কিংবা অনেক বন্ধুবান্ধবের কাছের মানুষকে কেড়ে নিয়েছে। সেসব বন্ধুর সঙ্গে দেখা হলে হয়তো তারা আর আগের মতো থাকবে না, বদলে যাবে। তবু একটা দিক দেখে খুব ভালো লাগে যে কারও সময়ই থেমে নেই।

সবাই কিছু না কিছু করছে। তাদের নিজের ভেতরের সুপ্ত প্রতিভাকে জাগ্রত করার চেষ্টা করছে। তাদেরকে দেখে নিজেও উৎসাহ পাচ্ছি, নতুন কিছু নিজেকে উপহার দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু হঠাৎ করে ভয়টা আবার চেপে বসে। এই কিছু হয়ে গেল কি না, এই কোনো প্রিয়জন হারানোর সংবাদ এল কি না। সবকিছু ছাড়িয়ে নিজেকে শক্ত রাখার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যেতে হচ্ছে। কারণ, যত দিনই বাঁচি না কেন, হতাশাগ্রস্ত হয়ে থাকতে চাই না। প্রতিটা নতুন দিন যেন নতুনভাবে আশার আলো জাগাচ্ছে। নতুন করে টু ডু লিস্ট তৈরি করছি। করোনারা একদিন হেরে যাবে, আমরা তাদেরকে হারিয়ে দেব। তারপর এ সুন্দর পৃথিবীকে আবার আমরা সাজাব। এ পৃথিবী ঘুরে দেখব। এ পৃথিবীকে ক্ষুদ্র একটা ভাইরাসের দখলে যেতে দেব না। এ বিশ্ব আমার, আমাদের। একদিন সব ঠিক হবে। আবার ব্যাগ গুছিয়ে শাটল ট্রেনে করে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাব, চায়ের টংয়ে বসে প্রিয়মুখগুলোর সঙ্গে ভাগাভাগি করব এ কয়েক মাসের সুখ–দুঃখের কথা।

*শিক্ষার্থী: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়