Thank you for trying Sticky AMP!!

পটোলের সঙ্গে একই খেতে পেঁয়াজ বপন করা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার সাঁথিয়ার বাওইটোলা গ্রামে

পাবনায় পেঁয়াজের খেতে সাথি ফসল, দ্বিগুণ লাভ

সাঁথিয়া অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী উপজেলা। এবার এখানে ১৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

লাভজনক হওয়ায় পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় আগাম জাতের পেঁয়াজ আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এবার কৃষকেরা পেঁয়াজ আবাদে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তবে অনেক কৃষকই এবার পেঁয়াজ আবাদ করছেন একই জমিতে অন্য ফসলের সঙ্গে। সাথি ফসল হিসেবে ঘাস, যব, বাঙ্গি, পটোল, ফুলকপি, ধনেপাতার আবাদ করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাঁথিয়া দেশের অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী উপজেলা। এবার এখানে ১৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার হেক্টর জমিতে আগাম বা মূলকাটা জাতের এবং ১৩ হাজার ৭৫০ হেক্টর জমিতে হালি পদ্ধতিতে।

সাধারণত নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে আগাম জাতের পেঁয়াজের আবাদ শুরু হয়ে থাকে। কিন্তু এবার পেঁয়াজের বাজার ভালো দেখে কৃষকেরা নির্ধারিত সময়ের সপ্তাহখানেক আগে থেকেই আগাম জাতের পেঁয়াজের আবাদ শুরু করেছেন। অনেক কৃষক ঘাস, যব, পটোল, বাঙ্গিসহ অন্য ফসলের সঙ্গে পেঁয়াজের আবাদ করছেন। এতে শ্রম কম লাগছে। একই জমি থেকে একাধিক ফসল পাওয়ায় কৃষকের লাভ বেশি।

কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আগাম জাতের পেঁয়াজ চাষের পদ্ধতিতে জমি ভালোমতো নিড়ানি, সেচ ও সার দিতে হয়। এরপর সরাসরি পেঁয়াজ বুনে দিতে হয়। এ থেকে পেঁয়াজ ঘরে তুলতে ৮০ থেকে ৯০ দিন সময় লাগে। এদিকে পেঁয়াজের খেতের ফাঁকে ফাঁকে ঘাস, পটোল, বাঙ্গি, মিষ্টিকুমড়া, যবসহ অন্যান্য ফসলের বীজ লাগানো হয়। অন্য ফসলের তুলনায় পেঁয়াজ দ্রুত তোলার উপযোগী হয়। বাজার ভালো থাকলে কৃষকেরা ৭০ থেকে ৮০ দিনের মধ্যে পেঁয়াজ তুলে বাজারে নিয়ে যান। কিছুদিন পর সাথি ফসল ঘরে তোলা হয়।

উপজেলার বায়া গ্রামের এক বিঘা জমিতে একই সঙ্গে ঘাস ও পেঁয়াজ চাষ করছেন নজরুল ইসলাম। তিনি জানান, আগে এই জমিতে তিনি এই সময়ে শুধু ঘাস চাষ করতেন। গত বছর থেকে ঘাসের সঙ্গে পেঁয়াজ আবাদ শুরু করেছেন। এভাবে পেঁয়াজ আবাদ করে ঘাসের ফলনে কোনো ক্ষতি হয়নি। বরং উপরি হিসেবে ১ বিঘা জমি থেকে গত বছর ৪৫ মণ পেঁয়াজ পেয়েছিলেন। পেঁয়াজের বীজসহ সব মিলিয়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ হয়েছিল। শুধু পেঁয়াজ বিক্রি করে ৮০ হাজার টাকার বেশি লাভ হয়েছে।

চাকলা মোল্লাবাড়ী গ্রামের ফসলের মাঠে গিয়ে দেখা যায়, দুই দিন আগে যে জমিতে যবের বীজ ছিটানো হয়েছে, সেই জমিতেই আগাম জাতের পেঁয়াজ লাগাচ্ছেন লালচাঁদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘যবের সাথে পেঁয়াজের আবাদ কইর‌্যা ভালো লাভের দেখা পাত্যাছি। যবের চাইতে পেঁয়াজ তাড়াতাড়ি বাড়ে। তিন মাসের আগেই জমির থ্যা সব পেঁয়াজ তুইল্যা ফেলা হবি। এই সময়ের মধ্যে যবগাছ এক থেকে দেড় ফুটের মতো লম্বা হবি। ’

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জীব কুমার গোস্বামী বলেন, সাথি ফসলের সঙ্গে পেঁয়াজ লাগিয়ে কৃষকেরা দ্বিগুণ লাভ করছেন। গত বছর ১ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের পেঁয়াজের আবাদ হয়েছিল। এবার আরও বেশি জমিতে এ পদ্ধতিতে আবাদ হবে।