Thank you for trying Sticky AMP!!

পৌর মেয়র, কাউন্সিলরসহ ১১ জনের নামে মানহানির মামলা

অপরাধ

কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌরসভার মেয়র ফখরুল আলম, কাউন্সিলরসহ ১১ জনের নামে দুই কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মানহানি মামলা হয়েছে। মিথ্যা মামলায় বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগে তবারক হোসেন নামের এক ব্যক্তি গতকাল বৃহস্পতিবার মামলাটি করেন। মামলা হয়েছে কিশোরগঞ্জ আমলি আদালত-২–এ। তবারক পেশায় ব্যবসায়ী ও পৌর শহরের শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর গ্রামের বাসিন্দা। তাঁর বাবার নাম শব্দর আলী।

মামলায় অভিযুক্ত অন্য আসামিরা হলেন কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদ প্যানেল চেয়ারম্যান মির্জা মো. সুলায়মান, ভৈরব পৌরসভার প্যানেল মেয়র মো. আল আমিন, কাউন্সিলর দ্বীন ইসলাম, হাবিবুল্লাহ নিয়াজ, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাজহারুল ইসলাম, পৌরসভার প্রধান সহকারী ইমাম হোসেন, উপজেলা যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জিল্লুর রহমান, পৌর শহর চণ্ডিবের মধ্যপাড়ার বাসিন্দা বাদল মিয়া, লিয়াকত আলী ও আবদুল হেকিম। মামলাটি তদন্ত করতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

উভয় পক্ষের সঙ্গের কথা বলে জানা যায়, তবারক হোসেনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ছিলেন চণ্ডিবের মধ্যপাড়ার ফারুক মিয়া নামের এক ব্যক্তি। পাঁচ বছর আগে লেনদেনের সূত্র ধরে ফারুকের কাছে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা পেতেন তবারক। তা চেয়েও না পেয়ে শেষে আদালতে মামলা করেন তিনি। মামলার রায় তবারকের পক্ষে আসে। কিন্তু ফারুক টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না। এ ঘটনার সূত্র ধরে আদালত ফারুকের বাড়ি ক্রোক করার নির্দেশ দেন। আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ফারুকের পরিবারের সদস্যদের ওয়ারিশ সনদের প্রয়োজন হয়। এ ক্ষেত্রে অভিযোগ ওঠে, মেয়রের স্বাক্ষর জাল করে ভুয়া সনদ তৈরি করেন তবারক। মেয়র বিষয়টি বুঝতে পেরে ২০১৭ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নিজ কার্যালয়ে ডেকে এনে তবারককে পুলিশে তুলে দেন এবং পৌর কর্তৃপক্ষ মামলা করে। ২ মাস ১৭ দিন জেলে থাকার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন তবারক। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। ওই ঘটনার সূত্র ধরে তবারক দুই কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানির মামলাটি করেন। বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার সঙ্গে আসামিরা যুক্ত ছিলেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে জিল্লুর রহমান, বাদল মিয়া, লিয়াকত আলী ও আবদুল হেকিম হলেন ফারুকের পরিবারের সদস্য।

তবারক হোসেন বলেন, ‘ওয়ারিশ সনদ আমি জাল করিনি। ফারুক করেছে। পরে আবার মেয়রের কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। মেয়র বিভ্রান্ত হয়ে লোক পাঠিয়ে আমাকে বাড়ি থেকে ধরে এনে পুলিশে দেন। মিথ্যা মামলার কারণে জেল খাটতে হয়েছে। এই কারণে সামাজিক ও ব্যবসায়িকভাবে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। যেহেতু মামলাটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে, সেই কারণে এই ভুলে সম্ভাব্য ক্ষতির ক্ষতিপূরণ চেয়ে মামলা করেছি।’

এ বিষয়ে প্যানেল মেয়র মো. আল আমিন বলেন, আসলে মামলা করার পর পৌরসভার পক্ষ থেকে আর খোঁজখবর রাখা হয়নি। ফলের রায়টি একপক্ষীয় হয়ে গেছে।

জেলা পরিষদের প্যানেল মেয়র মির্জা মো. সুলায়মান বলেন, ‘আমি ভৈরব পৌরসভার কেউ না। আবার ঘটনার বিষয়ে অবগত নই। ঘটনার দিন মেয়রের কক্ষে ছিলাম। সম্ভবত এটি আমার অপরাধ ছিল।’

মেয়র ফখরুল আলম বলেন, ‘আমার স্বাক্ষর জাল করার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় সেই দিন তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। এখানে কারও মানহানি করা পৌর কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্য ছিল না।’