Thank you for trying Sticky AMP!!

বগুড়ার পৌর কাউন্সিলর আমিনুল দুই দিনের রিমান্ডে

বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম

বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের কর্তৃত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় একটি মামলায় পৌরসভার কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলামকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। কারাগারে থাকা আমিনুলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ সোমবার বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নান্নু খান। বিচারক আহমেদ শাহরিয়ার তারিক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আমিনুল ইসলাম বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং বগুড়া সদর উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি। এ ছাড়া তিনি বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদকও।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ূন কবির প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিপক্ষের দায়ের করা মারামারির মামলায় আমিনুল ইসলামসহ ৩৪ আসামি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এর মধ্যে প্রধান আসামি আমিনুল ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আমিনুল ইসলামসহ ৩০ আসামি ৪ ও ৩ মার্চ বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক বেগম আসমা মাহমুদের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেছিলেন। আদালত জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের কর্তৃত্ব নিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে পুলিশের একজন সদস্য ছুরিকাহত হন। এ ঘটনায় সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে করা মামলাসহ চারটি মামলা হয়। পুলিশের একটিসহ তিন মামলায় আসামি করা হয় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম ওরফে মোহনকে। তিনি বর্তমানে হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন।

অন্যদিকে মঞ্জুরুল আলমের ছোট ভাই মশিউল আলম বাদী হয়ে করা আরেকটি মামলার আসামি পৌর কাউন্সিলর ও মোটর মালিক গ্রুপের সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম। আমিনুলসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে করা এই মামলায় মঞ্জুরুল আলমের মালিকানাধীন একটি পেট্রলপাম্পে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও মারধরের অভিযোগ আনা হয়।

আদালত সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় জালিয়াতির মাধ্যমে আমিনুল ইসলামসহ ৩০ আসামির ‘ভুয়া আগাম জামিন’–এর হাইকোর্টের একটি আদেশের নথি তৈরি করা হয়। বিষয়টি নজরে এলে হাইকোর্টের বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল বেঞ্চ ২৪ ফেব্রুয়ারি স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ ৩০ আসামিকে এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন। ভুয়া আদেশ তৈরি করায় তাঁদের বিরুদ্ধে (৩০ জন) কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়।

হাইকোর্টের ওই বেঞ্চ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ৩০ আসামি ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন বলে ভুয়া আদেশে উল্লেখ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী ৩০ জনের জামিন সঠিক কি না, তা যাচাইয়ের জন্য ওই আদেশটি আদালতের নজরে আনলে জালিয়াতির বিষয়টি ফাঁস হয়।

তথ্য যাচাইয়ের সময় ধরা পড়ে ১৪ ফেব্রুয়ারি এ ধরনের কোনো আদেশ দেননি ওই বেঞ্চ। এই বেঞ্চে আগাম জামিন আবেদনের শুনানিও হয়নি। যাচাইয়ের পর আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ৩০ আসামিকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন। ৩০ আসামি আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন।