Thank you for trying Sticky AMP!!

বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে বেশ কয়েকজনকে মারধর করেন পুলিশ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বগুড়ার চারমাথা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায়

বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপে আধিপত্য নিয়ে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

বগুড়ায় মোটর মালিক গ্রুপে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে আজ মঙ্গলবার দুই দফায় সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে। এক পক্ষ কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিতে গিয়ে আরেক পক্ষের ওপর হামলা করে। এ সময় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ২০ থেকে ২৫টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

মোটরসাইকেলে লাগানো আগুন নেভান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা

স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপে দুটি পক্ষ আছে। এর একটি পক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম ওরফে মোহন। তিনি মোটর মালিক গ্রুপের সাবেক আহ্বায়ক। আরেক পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক শাহ আকতারুজ্জামান। তিনি মোটর মালিক গ্রুপের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি। তাঁর পক্ষে আছেন সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম। তিনি মোটর মালিক গ্রুপের সর্বশেষ কমিটির সাধারণ সম্পাদক। এই কমিটি নিয়ে হাইকোর্টে মামলা বিচারাধীন।

শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের কাউন্টারে ভাঙচুর করা হয়

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মঞ্জুরুলের পক্ষের চার শতাধিক ব্যক্তি মোটরসাইকেলে করে বগুড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চারমাথার মোটর মালিক গ্রুপের কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণ নিতে আসেন। সেখানে তাঁরা পাঁচ-ছয়টি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এরপর ১৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় ভাঙচুর করেন। এই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আমিনুল ইসলাম। তিনি মঞ্জুরুলের প্রতিপক্ষ শাহ আকতারুজ্জামানের পক্ষের। আমিনুল ইসলামের শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের মালিক। ওই প্রতিষ্ঠানের কাউন্টারে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন তাঁরা। এ সময় সাতটি বাস ভাঙচুর করা হয়। আমিনুলের পক্ষে থাকা ৩০ থেকে ৪০ জন এ সময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। পুলিশ তখন তাঁদের সরিয়ে দেয়। প্রথম দফার এই হামলা ও সংঘর্ষের সময় রমজান নামে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার কনস্টেবল ছুরিকাহত হন। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ভিডিও ধারণ করতে গেলে জিটিভির ক্যামেরাপারসন রাজুর ওপর হামলা করা হয়। তাঁর ক্যামেরা ভাঙচুর করেন হামলাকারীরা।

বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়

এই ঘটনার সময় বগুড়ার পুলিশ সুপার (এসপি) আলী আশরাফ ভূঞা ঘটনাস্থলে ছিলেন। প্রথম দফায় ১৫ থেকে ২০টি ফাঁকা গুলি চালিয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

বেলা পৌনে দুইটার দিকে চারমাথা মোড়ে যান আমিনুল ইসলামের পক্ষের লোকজন। তাঁরা মঞ্জুরুলের একসময়ের মালিকানাধীন চারমাথা ফিলিং স্টেশনে ভাঙচুর চালান। এ ছাড়া নাভানা সিএনজি স্টেশনেও ভাঙচুর করা হয়। এ সময় আমিনুল অভিযোগ করেন, বিচারাধীন বিষয়ে মঞ্জুরুলের নেতৃত্বে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ একজোট হয়ে এই মামলা চালিয়েছে। মঞ্জুরুলের বিচার না হওয়া পর্যন্ত বগুড়া থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে বলে তিনি হুমকি দেন।

ভাঙচুরে ক্ষতিগ্রস্ত বাস

বেলা আড়াইটার দিকে শহরের দত্তবাড়ী এলাকায় ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম ওরফে মোহন বলেন, বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে দখল করে রেখেছেন কাউন্সিলর আমিনুল। এ নিয়ে হাইকোর্টে রিট করায় একজন মালিক হত্যার শিকার হয়েছেন। একজন পরিবহনমালিক হিসেবে তিনি আজ মোটর মালিক গ্রুপের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। মাইকে ঘোষণা দিয়ে আমিনুল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছেন।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, পুলিশ দুই পক্ষকে থামানোর চেষ্টা করেছে। দুই দফায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ২০ থেকে ২৫টি ফাঁকা গুলি চালায়। মঞ্জুরুলের পক্ষের লোকজনের ছুরিকাঘাতে এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।