Thank you for trying Sticky AMP!!

বন্দরে পোশাক কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে গুজব ছড়িয়ে রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা টোটাল ফ্যাশনে বৃহস্পতিবার হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।

নারায়ণগঞ্জের বন্দরে গুজব ছড়িয়ে একটি রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানায় গতকাল বৃহস্পতিবার হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই কারখানার ব্যবস্থাপকসহ অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে কারখানার ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ফিরোজ আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা কয়েক শ শ্রমিক ও বহিরাগত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দীপক চন্দ্র দাস বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, ঈদে শ্রমিকদের সব বেতন–ভাতা পরিশোধ করা হয় এবং শ্রম আইন অনুযায়ী ১২ শ্রমিককে চার মাসের অগ্রিম বেতন দিয়ে বাদ দেওয়া হয়। ওই শ্রমিকেরা অন্যদের উসকানি দিয়ে কারখানায় ভাঙচুর চালিয়েছেন।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, টোটাল ফ্যাশন কারখানা ঈদের পর গতকাল খোলা হয়। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে কারখানার দুটি ফটক দিয়ে শ্রমিকেরা ভেতরে প্রবেশ করতে শুরু করেন। স্থানীয় শ্রমিকদের জন্য একটি ফটক ও দূরবর্তী এলাকার শ্রমিকদের অপর একটি ফটক দিয়ে পরিচয়পত্র চেক করে ভেতরে প্রবেশ করান নিরাপত্তাকর্মীরা। এ সময় বাদ দেওয়া ১২ শ্রমিক কারখানার ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন। নিরাপত্তাকর্মীদের হাতে নারী শ্রমিকের দাঁত ভেঙেছে, এমন গুজব ছড়িয়ে দেওয়া হয় পুরো কারখানায়। পরে শ্রমিকেরা লোহার রড ও লাঠিসোঁটা নিয়ে কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর ও তাণ্ডব চালান। শ্রমিকেরা কারখানার কম্পিউটার, কাচের গ্লাসসহ মূল্যবান আসবাব ভাঙচুর করেন।

হামলায় কারখানার ব্যবস্থাপক কবিরুল আহম্মেদ, পিএম নুসরাত, জিএম জাহের, সিকিউরিটি ইনচার্জ নাহিদ, সুপারভাইজার জায়েদসহ অন্তত ১০ আহত হন। পরে শ্রমিকেরা অব্যাহতি নেওয়া স্থানীয় ১২ শ্রমিককে চাকরিতে পুনর্বহালসহ ১৭ দফা দাবিতে অবস্থান নেন। খবর পেয়ে থানা–পুলিশ, শিল্প পুলিশসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেখানে অবস্থান নেন। পরে জনপ্রতিনিধিদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

দুপুর ১২টার দিকে কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসিব উদ্দিন মিয়ার সঙ্গে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আলোচনার মাধ্যমে আগামী রোববার পর্যন্ত কারখানা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।

এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ-অঞ্চল) শেখ বিল্লাহ জানান, ঈদের আগে স্থানীয় ১২ শ্রমিককে বিধি মোতাবেক অব্যাহতি প্রদান করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এরপর ১৭ দফা দাবির কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দেন শ্রমিকেরা। ঈদের পর গতকাল কারখানা চালু হয়। এ সময় এক শ্রমিকের দাঁত ভেঙে ফেলার গুজব ছড়িয়ে অব্যাহতি পাওয়া শ্রমিকেরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর চালান।

হাসিব উদ্দিন মিয়া বলেন, ঈদে তাঁর কারখানার শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন সময় কাজ না করাসহ নানা অভিযোগে ১২ শ্রমিককে শ্রম আইনের ২৬ ধারা অনুযায়ী চার মাসের অগ্রিম বেতনসহ সব পাওনা পরিশোধ করে তাঁদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়া হয়। গতকাল ওই ১২ শ্রমিক অন্য শ্রমিকদের উসকানি দিয়ে কারখানা ভাঙচুর ও অফিসের কর্মকর্তাদের মারধর করে ছয়জনকে আহত করেন। কারখানার জানালার গ্লাস ও ৭০–৮০টি ক্যামেরা ভাঙচুর করা হয়।