Thank you for trying Sticky AMP!!

বন্যায় ভেসে গেছে পাঠ্যবই, পড়াশোনা ব্যাহত

সুনামগঞ্জের বন্যা কবলিত বিদ্যালয়

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার চিলাউড়া উচ্চবিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মাছুমা আক্তারের ঘরে গত ১৭ জুন রাতে বন্যার পানি ঢুকে পড়ে। ওই রাতে কোনো রকম পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে আসেন। এক দিন পর নৌকায় বাড়িতে গিয়ে দেখেন, বই-খাতাসহ সবকিছু ভেসে গেছে।

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় শুধু মাছুমা আক্তারের মতো উপজেলার কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর বই-খাতা বন্যায় ভেসে গেছে। বই না থাকায় এখন তারা পড়াশোনা করতে পারছে না। এর মধ্যে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর পরিবার দরিদ্র। তাই নতুন বই কেনার সামর্থ্য নেই।

চিলাউড়া উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে মাছুমার সঙ্গে কথা বলার সময় আরও কয়েক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক বন্যার পানিতে বই-খাতা ভেসে যাওয়ার কথা জানান। তাদের একজন মিতা আক্তার অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সে চিলাউড়া আশিঘর গ্রামের দিনমজুর আবদুল করিম ও গৃহিণী নুর ফুল বিবি দম্পতির মেয়ে।

নুর ফুল বিবি বলেন, ‘খুব কষ্টে অভাব-অনটনে চলছি। কয়েক দিন আগে মেয়েকে দেড় হাজার টাকার গাইড বই ও খাতা–কলম কিনে দিয়েছিলাম। আবার কিনে দেব, এ সক্ষমতাও নেই। এ ছাড়া আমাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও ছেলেমেয়েদের জন্মনিবন্ধন সনদ ভেসে গেছে।’

এ সময় সেখানে কথা শুনে জড়ো হন একই এলাকার বাসিন্দা নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আমিন মিয়া, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিম ও সাইম, পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী সালমান মিয়া। সবার বইখাতা বন্যার পানিতে ভেসে গেছে বলে তারা জানায়। চিলাউড়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক রিপন দাস বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে আট শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। সবার পরিবার বন্যাকবলিত, যাদের অধিকাংশ পরিবারের শিক্ষার্থীর বইখাতা নষ্ট হয়েছে।’

ইকড়ছই মাদ্রাসার শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের বইখাতা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি মাদ্রাসার অফিসকক্ষে থাকা শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।

রানীগঞ্জ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সামাদ বলেন, অনেক শিক্ষার্থী মুঠোফোনে জানিয়েছে, বন্যায় তাদের বইখাতা ভেসে গেছে। কেউ কেউ উদ্ধার করে শুকানোর চেষ্টা করছেন। তিনি জানান, যেসব শিক্ষার্থীর বই ভেসে গেছে, তালিকা তৈরি করে তাঁদের সহায়তা করা দরকার।

জগন্নাথপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মখলেছুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে এখনো আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। বন্যার পানি কমলে বিদ্যালয় খোলার পর শিক্ষার্থীদের বইখাতা নষ্ট হওয়া শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করা হবে।