Thank you for trying Sticky AMP!!

বরগুনায় কিশোর হৃদয়কে হত্যায় মামলা, গ্রেপ্তার ৭

নিহত কিশোর হৃদয়

বরগুনায় ঈদের দিন বিকেলে হৃদয় নামের এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। কিশোরের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে বরগুনা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ২০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ১৪-১৫ জনকে আসামি করা হয়।

পুলিশ বলছে, মঙ্গলবার বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে মামলার এক নম্বর আসামি নোমান কাজীসহ (১৯) সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া অপর আসামিরা হলেন হেলাল মৃধা (২৬), রানা আকন (১৭), ইমন (১৮), সাগর গাজী (১৬), হেলাল ফকির (২১) ও শফিকুল ফরাজী (১৭)। প্রধান আসামি নোমান কাজী বুড়িরচর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিক কাজীর ভাই কনু কাজীর ছেলে।

হৃদয়ের পরিবার জানায়, বুধবার দুপরে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত হয়। আজ সন্ধ্যায় বরগুনা সদরের বুড়িরচর ইউনিয়নের মানিকখালী গ্রামে নানাবাড়িতে লাশ দাফন হবে। হৃদয় বরগুনা শহরের চরকলোনি এলাকার চাঁদশী সড়কের বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। সে বরগুনা সরকারি টেক্সটাইল ও ভকেশনাল ইনস্টিটিউটে দশম শ্রেণির ছাত্র ছিল।

এ হত্যার ঘটনায় বরগুনার পুলিশ সুপার মঙ্গলবার রাত ১০টায় তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করে ৭ আসামিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানান। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার চারু হোসেন উপস্থিত থাকলেও লিখিত বক্তব্য পাঠ ও গণমাধ্যমকর্মীদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান। কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, সোমবার বিকেলে হৃদয় তার বন্ধুদের নিয়ে সদর উপজেলার পায়রা নদীর পারে গোলবুনিয়া এলাকায় ঘুরতে যায়। সেখানে পূর্বশত্রুতার জের ধরে একটি পক্ষের সঙ্গে তাদের বাগ্‌বিতণ্ডা এবং একপর্যায়ে মারামারি হয়। এতে উভয় পক্ষের লোকজন কমবেশি আহত হয়। তবে হৃদয় বেশি আহত হয়। পরে হৃদয়কে প্রথমে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল এবং বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মঙ্গলবার সকালে মারা যায়।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার পর বরগুনা থানার পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামিসহ সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করে। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, গত বছর রিফাত শরিফ হত্যার ঘটনার পর পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার এবং নিরপেক্ষভাবে মামলাটি তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। এরপর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মামলাটি এখন রায় ঘোষণার অপেক্ষায় আছে। কিন্তু অনেকে হৃদয় হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি রিফাত হত্যার আদলে সংঘটিত হয়েছে বলে প্রচার চালাচ্ছে। কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কিশোর গ্যাংয়ের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তা ছাড়া বরগুনা শহরে কিশোর গ্যাং বলতে কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই।

কী কারণে হৃদয়কে খুন করা হয়েছে? এমন প্রশ্ন করা হলে বুধবার দুপুরে তার মা ফিরোজা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে যে কারণে খুন করা হয়েছে সেসব কারণ আমি পুলিশকে বলেছি। পুলিশ আমাকে ছেলে হত্যার সঠিক বিচারের আশ্বাস দিয়েছে। পুলিশ বলেছে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমি ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’

গোলবুনিয়া এলাকার অন্তত দুজন বাসিন্দা বলেন, গোলবুনিয়া এলাকায় পায়রা নদীর পারের এই এলাকায় প্রতিদিন বিকেলে এবং বিভিন্ন উৎসবে বরগুনা শহর ও আশপাশের এলাকার লোকজন ঘুরতে আসে। ফলে এলাকাটি পর্যটন এলাকায় পরিণত হয়েছে। শহর থেকে তরুণ-তরুণীরা ঘুরতে গেলে বখাটেরা নানাভাবে হয়রানি ও উত্ত্যক্ত করে।