Thank you for trying Sticky AMP!!

বরিশালে নির্যাতনে যুবকের মৃত্যুর বিচার দাবিতে মানববন্ধন, সমাবেশ

পুলিশের নির্যাতনে রেজাউলের মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। সোমবার বেলা ১১টায় বরিশাল নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকার জেলা জজ আদালতের সামনে

বরিশালে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যদের হাতে গ্রেপ্তারের তিন দিন পর যুবক রেজাউল করিম ওরফে রেজার (৩০) মৃত্যুর ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করা হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা ১১টার দিকে নগরের ফজলুল হক অ্যাভিনিউ এলাকায় বরিশাল জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষানবিশ আইনজীবীরা। তাঁরা বলছেন, পুলিশি নির্যাতন করে শিক্ষানবিশ আইনজীবী রেজাউল করিমকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার তাঁরা উপযুক্ত বিচার চান।

সমাবেশে বক্তৃতা করেন শিক্ষানবিশ আইনজীবী মো. পারভেজ, বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহসিন মন্টু, আইনজীবী সমিতির সদস্য মিলন ভূঁইয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, শিক্ষানবিশ আইনজীবী সাকলাইন মোস্তাক প্রমুখ। বক্তারা বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ডিবি পুলিশের এসআই মহিউদ্দিন আহমেদের বিচার করতে হবে। অন্যথায় আইনজীবীরা আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।

গত ২৯ ডিসেম্বর রাতে ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন রেজাউল করিম। গ্রেপ্তারের তিন দিন পর বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার রাতে রেজাউলের মৃত্যু হয়। রেজাউল বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাসের পর বরিশালের আদালতে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে কাজ করছিলেন।

রেজাউলের পরিবারের অভিযোগ, ২৯ ডিসেম্বর রাত আটটার দিকে নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের হামিদ খান সড়কের একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে রেজাউলকে আটক করেন বরিশাল নগর ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিন আহমেদ। রেজাউলের কাছে মহিউদ্দিন দুজন মাদক ব্যবসায়ীর নাম জানতে চান। রেজাউল কিছু জানেন না বললে তাঁর পকেটে হাত দিয়ে নেশাজাতীয় ইনজেকশন পাওয়ার দাবি করে তাঁকে আটক করে নিয়ে যান তিনি।

নিহত রেজাউলের বাবা ইউনুস মুনসি বলেন, পুলিশের নির্যাতনের কারণেই তাঁর ছেলের মৃত্যু হয়েছে।

Also Read: লাশ নিয়ে সড়ক অবরোধ, এসআইয়ের বাড়িতে ইট নিক্ষেপ

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এসআই মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২৯ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে রেজাউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর সঙ্গে ১৩৬ গ্রাম গাঁজা ও ৪টি নেশাজাতীয় ইনজেকশন পাওয়া যায়। ওই দিন রাত পৌনে ১২টায় তাঁকে কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। রাতেই মামলা করা হয় এবং পরের দিন আদালত রেজাউলকে কারাগারে পাঠান। রেজাউলের বিরুদ্ধে আগে থেকেই মাদক মামলা আছে এবং তিনি মাদকাসক্ত। তাঁকে কোনো নির্যাতন করা হয়নি।

এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে গতকাল রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে রেজাউল করিমের লাশ নিয়ে বাড়িতে আসেন স্বজনেরা। এ সময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রেজাউলের মৃত্যুর ঘটনায় দোষী পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করে তাঁর লাশ নিয়ে সাগরদী মাদ্রাসাসংলগ্ন মহাসড়কে যান। তাঁরা বাঁশ, কাঠ ফেলে সড়কটি অবরোধ করেন এবং টায়ার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে বরিশাল নগরে ছোট যানবাহন ছাড়াও দূরপাল্লার যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা ছয়টার পর বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এ সময় বিক্ষোভকারীরা নগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ও সাগরদী এলাকার শের-ই-বাংলা সড়ক এলাকার বাসিন্দা মহিউদ্দিনের বাসার সামনে গিয়েও বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভ থেকে মহিউদ্দিনের বাড়ি লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে বাড়িটির বেশ কয়েকটি জানালার গ্লাস ভেঙে যায়।