Thank you for trying Sticky AMP!!

বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঘরের সামনে আরেকটি ভাগাড়

উন্মুক্ত স্থানে ময়লার ভাগাড়। গতকাল দুপুরে হাজারীবাগে ম্যাটাডোর পার্কের সামনে। প্রথম আলো

পাশেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঘর সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশন (এসটিএস)। কিন্তু পার্কের সামনে খোলা জায়গায় বাসাবাড়ির বর্জ্য ফেলে স্তূপ করে রাখা। এসব বর্জ্য পচে বৃষ্টিতে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। আশপাশের পরিবেশকে দূষিত করে ফেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৫৫ ও ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড পড়েছে কামরাঙ্গীরচর এলাকায়। আর পাশে থাকা এসটিএসটিতে মূলত হাজারীবাগ ও লালবাগ এলাকার বাসাবাড়ির বর্জ্য রাখা হয়। সেখানে কামরাঙ্গীরচর এলাকার বর্জ্য রাখার সুযোগ নেই। আর গৃহস্থালির বর্জ্য ফেলার জন্য নির্ধারিত কোনো জায়গা নেই। ফলে বর্জ্য সংগ্রহকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা হাজারীবাগ ম্যাটাডোর পার্কের সামনে বর্জ্য ফেলছেন।

ডিএসসিসি বলছে, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়নের জন্যই ম্যাটাডোর পার্কসংলগ্ন এই এসটিএসটি নির্মাণ করা হয়েছে। এখন রাস্তার পাশে বর্জ্য স্তূপ করে রাখার কথা না। বিষয়টি তাঁরা দ্রুত সময়ের মধ্যে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।

গতকাল রোববার সরেজমিনে দেখা যায়, কামরাঙ্গীরচরে ডিএসসিসির ৫৫ ও ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায় ও খালের পাড়ে বর্জ্য স্তূপ হয়ে আছে। এর মধ্যে ম্যাটাডোর পার্কের পশ্চিম-উত্তর কোণে ছয় থেকে সাত ফুট বর্জ্য স্তূপ হয়ে আছে। কামরাঙ্গীরচরের বিভিন্ন এলাকা থেকে ভ্যানে করে এসব বর্জ্য আনছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। তাঁরা ভ্যান থেকে বর্জ্যগুলো পার্কের সামনে ফেলেন। তাঁরা এসব আবর্জনা ঘেঁটে প্লাস্টিক সংগ্রহ করেন। এতে বেড়িবাঁধ সড়ক ও কামরাঙ্গীরচরের পশ্চিম রসুলপুর সংযোগ সড়কে বর্জ্য ছড়িয়ে পড়ছে। এ ছাড়া এই দুটি সড়কে দ্রুতগতিতে যান চলাচল করলেও বাতাসে ব্যাপক ধুলাবালু উড়ছে। নাক-মুখ চেপে চলাচল করছেন পথচারীরা। অথচ এই পার্কসংলগ্ন বড় এসটিএস রয়েছে।

কামরাঙ্গীরচরের পশ্চিম রসুলপুরের বাসিন্দা আলাউদ্দিন ও আবু কাউছার। গতকাল আলাপকালে তাঁরা বলেন, এই দুটি ওয়ার্ডের পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিম পাশে বুড়িগঙ্গা নদী। উত্তরে রয়েছে কামরাঙ্গীরচর খাল। কিন্তু যথাযথ বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় যে যাঁর মতো করে নদী ও খালে বর্জ্য ফেলছেন। অন্যদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বাসাবাড়ি থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে বেড়িবাঁধ সড়ক ঘেঁষে রাখছেন। এতে পথচারীদের নাক-মুখ চেপে চলতে হচ্ছে। অথচ পাশেই একটি এসটিএস রয়েছে। তাঁরা সেটি ব্যবহার করছে না। তাঁরা বলেন, অবিলম্বে এই বর্জ্যের স্তূপ অপসারণ করতে হবে। পরে নতুন করে যাতে কেউ বর্জ্য ফেলতে না পারেন, সে ব্যবস্থা করতে হবে।

ডিএসসিসির ৫৫ ও ৫৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বর্জ্য সংগ্রহ করে কামরাঙ্গীরচর সমাজকল্যাণ সংস্থা। এর পরিচালক জয়নাল আবেদীন বলেন, তাঁরা ডিএসসিসি থেকে অনুমতি নিয়ে বাসাবাড়ির বর্জ্য সংগ্রহ করেন। কিন্তু বর্জ্যগুলো স্তূপ করে রাখার মতো জায়গা দেয়নি ডিএসসিসি। ম্যাটাডোর পার্কসংলগ্ন এসটিএস থাকলেও সেটি ব্যবহারের সুযোগ নেই। কারণ হাজারীবাগ ও লালবাগের বাসাবাড়ির বর্জ্য সেখানে রাখা হয়। এ অবস্থায় বেড়িবাঁধ ঘেঁষে তাঁদের বর্জ্য ফেলতে হচ্ছে। এখন ডিএসসিসি এই দুটি ওয়ার্ডের জন্য আলাদা একটি এসটিএস করে দিলে এ সমস্যা আর থাকবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এই দুটি ওয়ার্ডের বর্জ্য ম্যাটাডোরের সামনের এসটিএসে রাখার ব্যবস্থা করব। এ ছাড়া ওয়ার্ড দুটিতে দ্রুত সময়ের মধ্যে এসটিএস নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’