Thank you for trying Sticky AMP!!

বসতভিটা রক্ষায় ফেসবুকে দুই বোনের আকুতি

কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের মাস্টারপাড়ার দুই বোনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে বসতভিটা রক্ষা ও নিজেদের নিরাপত্তার জন্য দুই বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুতি জানিয়েছেন। গত শনিবার ভিডিওটি ফেসবুকে আপলোড হয়। তাঁরা দুজন হলেন সাবেকুন্নাহার ও আসমাউল হুসনা।

দুই বোন জানান, ৪০ বছর ধরে মাস্টারপাড়ার পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বসতভিটায় থাকছেন তাঁদের মা সাজেদা খানম (৬০)। এটি তাঁদের খতিয়ানভুক্ত জমি। তাঁদের বাবা আবু বক্কর ছিদ্দিক মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পাঁচ বছর ধরে বাড়িতে নেই। মা, চার বোন ও দুই ভাইসহ সেখানে বসবাস করেন তাঁরা। এর মধ্যে বড় ভাইও মানসিক ভারসাম্যহীন।

পরিবারটির অভিযোগ, সম্প্রতি বসতভিটাটি দখলে নেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন স্থানীয় প্রভাবশালী শফিকুল ইসলাম। ৪ এপ্রিল রাতে সাজেদার বাড়িতে হামলা চালায় একদল দুর্বৃত্ত। এতে সাজেদাসহ দুই মেয়ে সাবেকুন্নাহার ও আসমাউল হুসনাও আহত হন। ঘটনার পর ৫ এপ্রিল শফিকুল ইসলামকে অভিযুক্ত করে থানায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেন তাঁদের ভাই আসহাব উদ্দিন। এতে ক্ষিপ্ত হন শফিক। ১৬ এপ্রিল রাতে সাজেদার বাড়িতে আবার হামলা চালানো হয়।

অন্যদিকে গভীর রাতে নিজের (শফিকের) একটি টিনশেড ঘর ভাঙচুর করে শফিকের লোকজন। ১৭ এপ্রিল বেলা তিনটার দিকে কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শফিকের ঘর ভাঙচুরের দায়ে সাজেদা ও তাঁর মেয়ে সাজিয়া আফরিনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। ১৮ এপ্রিল বিকেলে মারামারি মামলা দায়ের করে মা-মেয়েকে পাঠানো হয় কারাগারে। মামলার বাদী হয়েছেন শফিকের ভাই আব্দুর রহিম। আটকের চার দিন পর ২১ এপ্রিল বিকেলে জামিনে মুক্তি পান সাজেদা বেগম ও তাঁর মেয়ে।

নির্যাতিত পরিবারের ভিডিও বার্তাটি ছড়িয়ে পড়লে টনক নড়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের। ২১ এপ্রিল বিকেলে এবং রাত ১১টার দিকে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আদিবুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আদিবুল ইসলাম বলেন, ‘শফিকুল ইসলাম পুলিশকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেছিলেন। তদন্তে জানতে পেরেছি ওই বসতভিটা নিয়ে আদালতের ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে। কিন্তু তা না মেনে শফিকুল ওই পরিবারকে জোর করে উচ্ছেদ করতে চাইছেন। কিন্তু তা করতে দেওয়া হবে না। পুলিশ শফিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।’

পুলিশ জানায়, শফিকুলকে ধরতে এলাকায় অভিযান চলছে। শফিকের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, নাশকতাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সাবেকুন্নাহার বলেন, ‘আমার বাবা ও বড় ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন। আরেক ভাই ও বোনেরা চাকরি করে কোনোরকম সংসার চালাই। এখন বসতভিটাটি দখল করলে মাথা গোঁজার ঠাঁই হবে না। এ ক্ষেত্রে আমরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই।’