Thank you for trying Sticky AMP!!

বাগমারায় আ.লীগ ছাড়া সব প্রার্থীর পোস্টার রাতারাতি উধাও

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন ভবানীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী আবদুর রাজ্জাক। শনিবার বিকেলে রাজশাহীর বাগমারা প্রেসক্লাব।

রাজশাহীর বাগমারার ভবানীগঞ্জ পৌরসভায় মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য প্রার্থীদের পোস্টার রাতারাতি উধাও হয়েছে। তাঁদের ঝোলানো সব পোস্টার ছিঁড়ে ও পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। প্রচারণায় বাধাও দেওয়া হচ্ছে। এ অভিযোগ করেছেন বাকি সব প্রার্থীই।

এ পৌরসভায় মেয়র পদে চারজন প্রার্থী রয়েছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের আবদুল মালেক মণ্ডল, বিএনপির আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক এবং স্বতন্ত্র এস এম মামুনুর রশিদ ও কামাল হোসেন। এ পৌরসভায় ১৬ জানুয়ারি ভোট হবে।

আজ শনিবার বিকেলে বাগমারা প্রেসক্লাবে বিএনপির প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে তিনি লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।

আবদুর রাজ্জাক বলেন, গতকাল শুক্রবার রাতে পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ঝোলানো পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের ছাড়া অন্য তিন প্রার্থীর পোস্টার নেই। রাতের বেলায় পোস্টারগুলো ছিঁড়ে গায়েব করা হয়েছে। বিষয়টি সকালে তাঁরা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে বিএনপির প্রার্থী বলেন, তাঁকে প্রচারণাও চালাতে দেওয়া হচ্ছে না। তাঁর কর্মী-সমর্থকদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক বহিরাগতদের নিয়ে প্রচারণা চালানো ছাড়াও কেন্দ্র দখলের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

আবদুর রাজ্জাক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এমনকি থানার গেটের সামনে ঝোলানো অন্য প্রার্থীদের পোস্টারও গায়েব করে দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত।

তাঁরা (প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা) নিজেরাই নিজেদের পোস্টার ছিঁড়েছে।
গোলাম সারওয়ার আবুল, আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মহসিন আলী, ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল করিম, বিএনপির নেতা ডি এম জিয়াউর রহমান প্রমুখ।

বিএনপির প্রার্থীর অভিযোগের বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, সব অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের থানায় অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি দল মাঠে তৎপর রয়েছে।

এ বিষয়ে বাগমারা থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন স্বতন্ত্রপ্রার্থী এস এম মামুনুর রশিদ। শনিবার সকালে ভবানীগঞ্জ জিরো পয়েন্টে।

এর আগে সকালে ভবানীগঞ্জ জিরো পয়েন্টে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মামুনুর রশিদ প্রতিবাদ সভা করেন। এতে তাঁর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্রনাথ সরকার বক্তব্য দেন।

বীরেন্দ্রনাথ বলেন, তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করা হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে না যেতে ও কেন্দ্র দখলের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ঝোলানো পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন এক রাতেই গায়েব করে দেওয়া হয়েছে।

সভায় আরও বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহ জাফরুল্লাহর স্ত্রী রিজিয়া সুলতান, মেয়ে জাফরিন সুলতানা, প্রার্থী এস এম মামুনুর রশিদ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বর্তমান সরকার যখন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তখন সরকারেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য স্থানীয় একটি পক্ষ উঠেপড়ে লেগেছে। এসব কাজ সুষ্ঠু ভোটের লক্ষণ হতে পারে না।

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরও সব পোস্টার উধাও হয়ে গেছে। এমনকি তাঁর নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনের পোস্টারও ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার আবুল বলেন, তাঁরা (প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা) নিজেরাই নিজেদের পোস্টার ছিঁড়েছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে পোস্টারে আগুন দেওয়া হয়েছে।