Thank you for trying Sticky AMP!!

বাজিতপুরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষে একজন নিহত, আহত অর্ধশতাধিক

কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র।

কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার কৈলাগ ও রাহেলা গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরে পুলিশ ঘণ্টখানেক চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে নিহত ওই ব্যক্তি হলেন রহিম মিয়ার ছেলে শফিক মিয়া (৪৫)। তিনি কৈলাগ গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কৈলাগ ও রাহেলা এ দুই গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এলাকার দুই পক্ষের বিরোধ চলে আসছিল। সাবেক ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন কৈলাগ গ্রামের ও রঙ্গু মিয়া নামের এক ব্যক্তি রাহেলা গ্রামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পূর্বশত্রুতার জেরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের মধ্যে এক দফা সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার জেরে আজ সকাল ১০টা থেকে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে দুই পক্ষের লোকজন লাঠিসোঁটা ও বল্লম নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় শফিকসহ বেশ কয়েকজন বল্লমের আঘাতে আহত হন। গুরুতর আহত অবস্থায় শফিককে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

সংঘর্ষের খবর পেয়ে প্রথমে বাজিতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে কুলিয়ারচর, কটিয়াদী ও কিশোরগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে ঘণ্টাখানেক চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এর আগেই কৈলাগ গ্রামের ৩০টি এবং রাহেলা গ্রামের ১০টি বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। কয়েকটি বাড়িতে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে এলাকাবাসীরা দাবি করছেন।

কৈলাগ গ্রামের আলমগীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, রঙ্গু একজন মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর হাত ধরে এলাকায় ইয়াবার বিস্তার ঘটেছে। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে রঙ্গুর সঙ্গে বিরোধ বাধে। রঙ্গুর জন্য এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনা যাচ্ছে না। গ্রামকে মাদক ও সন্ত্রাসমুক্ত করতে চাওয়ায় রঙ্গুর নেতৃত্বে রাহেলা গ্রামের লোকজন তাঁদের ওপর হামলা চালিয়েছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে রঙ্গু মিয়া বলেন, ‘আলমগীর এলাকার ত্রাস। কৈলাগ গ্রামবাসীকে ব্যবহার করে নিজের প্রয়োজনে এলাকায় অস্থিরতা তৈরি করে রেখেছে। আমাদের মধ্যে বিভাজনের মূল নায়ক আলমগীর।’

আলমগীরের নেতৃত্বে কৈলাগ গ্রামবাসীর হামলায় রাহেলা গ্রামের অসংখ্য বাড়িঘর ভাঙচুর হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। তবে রাহেলা গ্রামের হামলায় কৈলাগ গ্রামের কেউ আহত বা নিহত হননি বলেও তিনি দাবি করেন।

বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। তবে আজ সংঘর্ষের খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। ওই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেখানে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।