Thank you for trying Sticky AMP!!

বাড়িতে মিলল ৬৭ বস্তা চাল, আ.লীগ নেতা কারাগারে

ন্যায্যমূল্যের চাল চুরির মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের নেতা আলাল উদ্দিন। আজ রোববার বেলা ১টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানার সামনে। ছবি: সংগৃহীত

রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল চুরির মামলায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগের এক নেতাকে আজ রোববার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় তাঁর বাড়ি থেকে ৬৭ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করা হয়।

এই নেতার নাম আলাল উদ্দিন ওরফে স্বপন। তিনি গোদাগাড়ী উপজেলার পাকড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের পরিবেশক। তাঁর বাড়ি থেকে চাল উদ্ধারের পর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জামাল উদ্দিন তাঁর নামে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন।

চাল উদ্ধার করার পর শনিবার রাতেই পুলিশ তাঁকে আটক করে গোদাগাড়ী থানায় নিয়ে আসে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম প্রথম আলোকে জানান, রাতেই তাঁর নামে মামলা করা হয়েছে। আজ রোববার বেলা একটার দিকে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বিকেলে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে আওয়ামী লীগের নেতা আলাল উদ্দিনের বাড়িতে অভিযানে যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল ইসলাম সরকার ও গোদাগাড়ী থানার ওসি খাইরুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ। তারা অভিযান চালিয়ে আলাল উদ্দিন ও তাঁর ভাইয়ের বাড়ি থেকে ৫০ কেজি ওজনের ৬৭ বস্তা সরকারি চাল উদ্ধার করে।

এ বিষয়ে মুঠোফোনে ইউএনও নাজমুল ইসলাম সরকার প্রথম আলোকে বলেন, কিছু বস্তায় সরাসরি সরকারি সিল দেওয়া রয়েছে। বাকি চালগুলোর বস্তা পরিবর্তন করা হয়েছে। মানুষের মধ্যে বিতরণ করার ইচ্ছা থাকলে তো আর বস্তা পরিবর্তন করার প্রয়োজন পড়ে না। এই নেতা ও পরিবেশক এলাকার ৫০০ কার্ডধারী মানুষের কাছে বিক্রি করার জন্য ১৫ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পেয়েছেন। তাঁর রেজিস্টারে দেখা গেছে, ৫০০ জনের মধ্যে ৪৯২ জনের কাছে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রি করা হয়েছে। রেজিস্টারে কিছু ক্রেতার স্বাক্ষরের জায়গা ফাঁকা রয়েছে। আর কিছু স্বাক্ষর দেখেই বোঝা যাচ্ছেÑজাল।

ইউএনও জানান, অভিযান চালানোর খবর শুনে স্থানীয় বঞ্চিত লোকজন তাঁর কাছে আসেন। তাঁরা বলেন, তাঁদের কার্ড অনেক দিন আগেই কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের চাল দেওয়া হয় না। একজন বৃদ্ধ লোকও কাঁদতে কাঁদতে এসে একই অভিযোগ করেন।

ইউএনও নাজমুল ইসলাম সরকার আরও বলেন, একজন পরিবেশকের নিজস্ব গুদাম থাকতে হবে। গুদামের সামনে সাইনবোর্ড থাকতে হবে। তাঁর এসবের কিছুই নেই। নিজ বাড়িতে সব নিজের মতো করে রেখেছেন। তাঁর বাড়িতে ৩৫টি কার্ড পাওয়া গেছে, যাতে কোনো স্বাক্ষর নেই। আরও প্রায় ১০০টি ফাঁকা কার্ড পাওয়া গেছে, যা ক্রেতাদের দেওয়াই হয়নি। ইউএনও বলেন, তাঁর বাড়িতে এ রকম সরকারি সিল দেওয়া অনেক বস্তা রয়েছে। এই নেতা একেকবার একেক রকম কথা বলছেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, এর আগেও এই নেতা ন্যায্যমূল্যের চালের পরিবেশক ছিলেন। তখনো তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় লোকজন জেলা প্রশাসকের কাছে ন্যায্যমূল্যের চাল, কৃষি ভর্তুকির সার ও বীজ কার্ডধারী কৃষকের কাছে বিক্রি না করে আত্মসাতের অভিযোগ দিয়েছিলেন। সেই অভিযোগের এখনো তদন্ত হয়নি।