বিনা মূল্যে ব্যাগ ভরে বাজার করার আনন্দ দিল 'সম্প্রীতির বাজার'
নরসিংদীর রায়পুরায় দুস্থ ও অসহায়দের বিনা মূল্যে একবেলা ব্যাগ ভরে বাজার করার আনন্দ দিতে ব্যতিক্রমী এক উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে এসেছে সেনাবাহিনী। এই উদ্যোগের নাম ‘সম্প্রীতির বাজার’।
আজ সোমবার দুপুরে রায়পুরা সরকারি কলেজ মাঠে এক দিনের এই বাজার থেকে খাদ্যসহায়তা ও ঈদসামগ্রী উপহার পেয়েছেন করোনা সংকটে কর্মহীন স্থানীয় ১ হাজার ব্যক্তি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ৯ আর্টিলারি ব্রিগেডের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, এক দিনের এই সম্প্রীতির বাজার আয়োজন ও ব্যবস্থাপনায় রয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশন। করোনা প্রাদুর্ভাবের এই দুঃসময়ে ঈদ সামনে রেখে মূলত দুস্থ, অসহায় ও নিম্নবিত্ত মানুষদের সহযোগিতা করার জন্য এই বাজারের আয়োজন করা হয়। নরসিংদীর জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতায় আগে থেকেই রায়পুরা এলাকায় করোনা সংকটে কর্মহীন ১ হাজার ব্যক্তির তালিকা তৈরি করা হয়। ওই তালিকায় স্থানীয় তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া স্থানীয় কৃষকদের লাভবান করতে তাঁদের কাছ থেকে ন্যায্যমূল্যে সবজি কিনে এই বাজারে রাখা হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুর ১২টা থেকে এক দিনের এই বাজারে আসতে থাকেন তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিরা। কোনো রকম হইহুল্লোড় ও উপচে পড়া জনসমাগম সৃষ্টি না করে সৈনিকদের সহযোগিতায় প্রবেশমুখে হাত ধুয়ে বাজারে প্রবেশ করেন তাঁরা। সুশৃঙ্খলভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এক মিনিটের মধ্যেই বাজার শেষ করেছেন তাঁরা। আগে থেকেই সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে রাখা খাদ্যসামগ্রী ও ঈদ উপহার তাঁদের ব্যাগে ভরে দিতে সাহায্য করেছেন নিয়োজিত সৈনিকেরা। বাজারে ছিল চাল, ডাল, আটা, আলু, লবণ, নুডলস, লবণ, সেমাই, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও সবজি বীজ।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল গাজী আবদুস সালামের সঞ্চালনায় এই ব্যতিক্রমী আয়োজনে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন ও পুলিশ সুপার প্রলয় কুমার জোয়ারদার। এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ শফিউর রহমান, রায়পুরায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম, রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মহসিনুল কাদির ও নরসিংদী প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল পারভেজ।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম করোনায় বিপর্যস্ত অসহায়, নিম্নবিত্ত ও কর্মহীন মানুষদের ঈদের আগে ব্যাগভর্তি বাজার করার আনন্দ দিতে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতায় চমৎকার টিমওয়ার্কের মাধ্যমে আমরা তা সম্ভব করতে পেরেছি বলে সত্যিই আনন্দ লাগছে। এমন আয়োজন আমরা আরও করতে চাই।’