Thank you for trying Sticky AMP!!

বিনোদন কেন্দ্র নেই, তাই ...

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে কোনো বিনোদন কেন্দ্র না থাকায় রেলস্টেশনের পাশে ভিড় করেন স্থানীয় লোকজন। রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে গতকাল বুধবার সেলফি তুলছিলেন কয়েক তরুণী। ছবি: প্রথম আলো।

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলা সদরে কোনো বিনোদন কেন্দ্র নেই। বন্ধ হয়ে গেছে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে থাকা ছয়টি সিনেমা হল। এ কারণে ঈদ উপলক্ষে এলাকাবাসী রেলস্টেশন, নদীর পাড় ও একটি সেতুকেই বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছে।

ঈদের দিন গতকাল বুধবার সরেজমিনে মির্জাপুর রেলস্টেশনে দেখা গেছে মানুষের ভিড়। ট্রেন চলাচল ছিল বন্ধ। এই সুযোগে স্টেশনের পশ্চিম পাশে ছিল শত শত মানুষের ভিড়। শিশু, তরুণ, যুবক ও বয়স্করা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সেখানে ভিড় করেন। স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ীরা শিশুদের জন্য খেলনা, চটপটি, ফুচকাসহ নানা ধরনের সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেন। ঈদে বিনোদনের জন্য আসা দর্শনার্থীরা সেখান থেকে ইচ্ছামতো জিনিসপত্র কিনেছেন, খেয়েছেন।

সেখানে আসা গোড়াইল গ্রামের লিয়াকত আলী, শামীম আল মামুন ও হাবেল মৃধাসহ অনেকে জানান, আগে মির্জাপুর উপজেলা সদরের দুটি সিনেমা হলসহ উপজেলার পাকুল্যাতে দুটি, জামুর্কীতে একটি ও হাঁটুভাঙাতে একটি সিনেমা হল ছিল। ঈদের দিন থেকে শুরু করে সিনেমা হলগুলোয় দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় থাকত। বিশেষ করে গোড়াই শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের যাঁরা ঈদের ছুটিতে বাড়ি যেতেন না, তাঁরা ভিড় করতেন সিনেমা হলে। তাঁদের কারণে টিকিট পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ত। এখন স্যাটেলাইট চ্যানেলের ভিড়ে সিনেমা হলগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে বিনোদনের ব্যবস্থাও হারিয়ে গেছে। মানুষ একটু আনন্দ পাওয়ার আশায় রেলস্টেশনের পাশে ভিড় করেছেন। বিকেলের দিকে অনেকে ভিড় করেছেন আলহাজ একাব্বর হোসেন সেতুতে। আবার কেউ বংশাই ও লৌহজং নদের পাড়ে।

মেলায় খেলনা বিক্রি করতে আসা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ঈদের দিনে আমাগো আয় অইতাছে। মানুষ মজাও পাইতাছে।’

রেলস্টেশনের অদূরে পশ্চিম দিকে হাঁটতেই চোখে পড়ল চারজন তরুণী একসঙ্গে দাঁড়িয়ে মুঠোফোনে সেলফি তুলছেন।

গতকাল বুধবার ঈদের দিন রেলস্টেশনের কাছে লোকজনের ভিড়। ছবি: প্রথম আলো

স্থানীয় লোকজন জানান, গতকাল উপজেলার গোড়াইল, গাড়াইল, বটতলা, ত্রিমোহন, পোস্টকামুরী, বাইমহাটি, সরিষাদাইড়, বাওয়ার কুমারজানী, চাকলেশ্বর, দুল্যামনসুরসহ আশপাশের কমপক্ষে ১৫টি গ্রামের মানুষের মিলনমেলা বসেছিল রেলস্টেশন, বংশাই ও লৌহজং নদের পাড়ে।

চাকলেশ্বর গ্রামের ফরিদ মিয়া, বটতলা এলাকার সুমন মিয়াসহ অনেকেই জানান, মির্জাপুরের মানুষ বিনোদনপ্রিয়। কিন্তু তাঁদের বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক কিংবা সিনেমা হল না থাকাটা দুঃখের বিষয়। তাঁরা অন্তত শিশুদের কথা চিন্তা করে বিনোদন কেন্দ্র বা পার্ক নির্মাণের দাবি করেন।

মির্জাপুর পৌরসভার মেয়র মো. সাহাদৎ হোসেন বলেন, খুব শিগগির বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে মির্জাপুর পৌর এলাকার ভেতর দিয়ে প্রবহমান বংশাই ও লৌহজং নদের সংযোগ খালটির (বারখাল) দুই পাশ সংস্কার করা হবে। সেখানে বিনোদনসামগ্রী রাখা হবে। সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য লাগানো হবে গাছপালা। এতে বিনোদনপ্রিয় মির্জাপুরবাসীর বিনোদনের খোরাক কিছুটা হলেও মিটবে।