Thank you for trying Sticky AMP!!

বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি, ঝুঁকির মুখে সেতু

চার দিন ধরে এই ভাঙন চলছে সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন ও পাশের ডিক্রিরচর ইউনিয়নের

পদ্মার ভাঙনের কবলে গোলডাঙ্গী সেতু। গতকাল দুপুরে ফরিদপুরের কাইমউদ্দিন মাতব্বরের ডাংগী এলাকায়

ফরিদপুর সদর উপজেলায় দুটি ইউনিয়নে ফসলি জমি পদ্মা নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে গোলডাঙ্গী সেতু।

চার দিন ধরে এই ভাঙন চলছে সদর উপজেলার নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন ও পাশের ডিক্রিরচর ইউনিয়নের শুকুর আলী মৃধার ডাঙ্গী, সলিম বিশ্বাসের ডাঙ্গী, কায়মদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে।

বুধবার থেকে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ডিক্রিরচর–সংলগ্ন কায়মুদ্দিন বিশ্বাসের ডাঙ্গী এলাকায় পদ্মাপাড়ে এক কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর ফলে হুমকির মুখে পড়েছে গোলডাঙ্গী সেতু। ওই সেতু থেকে নদী এখন মাত্র ৫০০ গজ দূরে রয়েছে।

কাইমুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা কৃষক চুন্নু সিকদার (৪৪) বলেন, ‘ভাঙনের কথা শুইনা গত বৃহস্পতিবার ডিসি, ইউএনওসহ প্রশাসনের বড় বড় কর্মকর্তা আইছিলেন। তাঁরা বলছিলেন, “এখনই ব্যবস্থা নিচ্ছি, বস্তা ফেলছি।” কিন্তু গতকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত একটি বস্তাও নদীতে ফেলা হয়নি।’

সলিম বিশ্বাসের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা রাকিব হোসেন (৩২) বলেন, যেভাবে ভাঙন শুরু হয়েছে, এখনই ব্যবস্থা না নিলে ব্রিজের জায়গায় নৌকা দিয়ে পার হতে হবে।

ওই এলাকার বাসিন্দা লতিফ গাছি (৮৭) বলেন, চার দিন ধরে গোলডাঙ্গীর সেতুর দিকে ভাঙন শুরু হয়েছে। বুধবার থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ভাঙন তীব্র ছিল। গতকালও ভাঙন ছিল। এখনই ব্যবস্থা না নিলে সেতুটি রক্ষা করা যাবে না।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোলডাঙ্গী সেতুটিসহ ওই এলাকা ফরিদপুর শহর রক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে সিঅ্যান্ডবি ঘাটবাজার থেকে গোলডাঙ্গী বাজার হয়ে গুলজার মণ্ডলের বাজার বায়া নর্থ চ্যানেল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) অফিস সড়কে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ৯০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫ দশমিক ৫ মিটার প্রস্থের সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৮ কোটি ৮২ লাখ ৯২ হাজার টাকা।

নর্থ চ্যানেল ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাকুজ্জামান বলেন, নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের শুকুর আলী মৃধার ডাঙ্গী, সলিম বিশ্বাসের ডাঙ্গী, কায়মুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও ইউসুফ মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে চার দিন ধরে ভাঙন চলছে। ওই এলাকার অন্তত দুই একর ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটা হারিয়েছেন এক ব্যক্তি।

ডিক্রিরচর ইউপির চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান বলেন, চরের কারণে পদ্মার পানি যেভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে ঢুকছে সে বাধা অপসারণ না করা হলে এ ভাঙন রোধ করা সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, এর জন্য চর ও নদীর মাঝের কিছু জায়গায় ড্রেজিং করা জরুরি।

গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ভাঙনের স্থান পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার ও পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ।

সুলতান মাহমুদ বলেন, ওই এলাকার ভাঙন ফরিদপুর শহরের জন্য অনেকটাই হুমকিস্বরূপ। এ জন্য ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। বিষয়টি পাউবোর মহাপরিচালককে জানানো হয়েছে।

নির্বাহী প্রকৌশলী সুলতান মাহমুদ আরও বলেন, পাউবোর উদ্যোগে আপাতত ভাঙন রোধে এক হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হবে। নদীর গতিপথ পরিবর্তনের জন্য খননকাজে বিআইডব্লিউটিএর পাশাপাশি স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা অংশ নিতে পারবেন।