Thank you for trying Sticky AMP!!

দেড় কিলোমিটার দূর থেকে পানি সংগ্রহ করে আনছেন নারীরা। সম্প্রতি কেশবপুর পৌরসভার কর্মকার পাড়ায়

বিশুদ্ধ পানির সংকটে তাঁরা

দুই শতাধিক পরিবারকে দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূর থেকে গভীর নলকূপ ও পুকুরের পানি আনতে হচ্ছে।

এলাকার নলকূপের পানিতে আর্সেনিক। তাই রান্নাসহ দৈনন্দিন কাজে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূর থেকে পানি সংগ্রহ করেন গৃহবধূ তানজিলা বেগম। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এভাবে পানি সংগ্রহ করে আনেন। তাঁর বাড়ি যশোরের কেশবপুর পৌরসভার মধ্যকূল এলাকার দফাদারপাড়ায়।

ওই এলাকার অন্তত দুই শতাধিক পরিবার বিশুদ্ধ পানির সংকটে রয়েছে। প্রায় দুই দশক ধরে তাদের দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দূর থেকে গভীর নলকূপ ও পুকুরের পানি আনতে হচ্ছে। পৌরসভার বাসিন্দা হলেও নাগরিক সুবিধা পাচ্ছেন না এলাকার বাসিন্দারা। দীর্ঘদিনেও ওই এলাকায় কোনো গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়নি।

মূলত এলাকার গৃহবধূরা দৈনন্দিন কাজের জন্য পানি সংগ্রহ করে আনেন। কিন্তু অনেক দূর থেকে পানি আনতে গিয়ে তাঁদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তানজিলা বেগম বলেন, ‘ইবার ভোট চাতি আসলি আগে কব ডিপ টিউবয়েল (গভীর নলকূপ) দিতি হবি। তারপর ভোট দেব।’

বর্তমানে সব থেকে বড় কষ্টের কাজ পানি আনতে যাওয়া। প্রতিদিনই কাজটি করতে হয়।
তারেক রাফি ভূঁইয়া, ভুক্তভোগী গৃহবধূ

কেশবপুর পৌরসভার মধ্যকূল এলাকার দফাদারপাড়া, মোল্লাপাড়া, মোড়লপাড়া, চারের মাথাপাড়া, কর্মকারপাড়া ও জোমারদারপাড়ার প্রায় দুই শতাধিক পরিবার বিশুদ্ধ পানির সংকটে পড়েছে। সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, গাজিপাড়া মসজিদের পাশে ও মধ্যকূল মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গভীর নলকূপে পানি নেওয়া মানুষের ভিড়। তাঁরা এক থেকে দেড় কিলোমিটার দূরের কর্মকারপাড়া, দফাদারপাড়া, মোল্লাপাড়া, মোড়লপাড়া, চারের মাথাপাড়া ও জোমারদার পাড়া থেকে এসেছেন। সন্ধ্যার মধ্যে পানি নিয়ে বাড়িতে ফিরতে চান তাঁরা। তাই কে আগে পানি নেবেন, তা নিয়ে প্রতিযোগিতা করছেন।

কর্মকারপাড়ার গৃহবধূ সরস্বতী রায় বলেন, ‘বর্তমানে সব থেকে বড় কষ্টের কাজ পানি আনতে যাওয়া। প্রতিদিনই কাজটি করতে হয়।’

আরেক গৃহবধূ লক্ষ্মী রানী বলেন, ‘বিশুদ্ধ পানি পাই না। আবার নাকি আমরা পৌরসভার বাসিন্দা!’

সড়কের কাজ চলায় পানির লাইন টানা যায়নি। দ্রুত পানি সরবরাহ করা হবে।
রফিকুল ইসলাম, মেয়র, কেশবপুর পৌরসভা

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী রায়হান আহম্মেদ জানান, যথাযথ পানির স্তর না পাওয়ার বিষয়টি পৌর এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপনে বড় অন্তরায়। একটি গভীর নলকূপের জন্য সাধারণত ৯০০ ফুটের নিচে গিয়ে পানির স্তর পাওয়া যায়। কিন্তু পৌর এলাকায় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ ফুট নিচে গিয়েও পানির স্তর পাওয়া যায় না। পৌর এলাকায় লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা ছাড়া বিকল্প পথ নেই।

মোল্লাপাড়ার বাসিন্দা আবদুল বারিক বলেন, ‘পৌরসভায় কত জানালাম পানির ব্যবস্থা করতে। কিন্তু কিছুই হলো না।’

কেশবপুর পৌরসভার মেয়র রফিকুল ইসলাম বলেন, মধ্যকূল এলাকায় পানি সরবরাহ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর আগে একবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের সম্প্রসারণের কাজ চলায় পানির লাইন টানা যায়নি। তবে দ্রুত লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হবে।