Thank you for trying Sticky AMP!!

বোরো নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

চাঁদপুর

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় ২০ দিন ধরে দোকানপাট বন্ধ। চলছে লকডাউনও। কৃষিশ্রমিকেরা ঘরবন্দী। দোকান বন্ধ থাকায় চাষিরা সার ও কীটনাশক কিনে বোরো খেতে ছিটাতে পারছেন না। শ্রমিকের অভাবে খেতে সেচও বন্ধ। এসব কারণে এ মৌসুমে বোরোর প্রত্যাশিত উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় মোট চার হাজার ৬৯০ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের বোরো ধানের চারা আবাদ করা হয়। অধিকাংশ খেতের বোরো ধানের গাছ শিষ ছাড়ার পথে। কিছু কিছু বোরো খেত শিষ ছাড়িয়েছে। দেরিতে আবাদ করা কিছু বোরো খেতে ধানের চারা শৈশব পেরিয়ে কৈশোরে পা রাখছে।

গতকাল শনিবার উপজেলার উদ্দমদী, ঢাকিরগাঁও, চরমুকুন্দি, ভাঙ্গারপাড়, বোয়ালিয়া, নলুয়া, দীঘলদি, বরদিয়া, দূরগাঁও, নাগদাসহ আরও কয়েকটি এলাকায় দেখা যায়, সেখানের বেশ কিছু বোরো খেত সেচের অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। সময়মতো সার ছিটাতে না পারায় কিছু কিছু খেতে ধানগাছের রং হলুদ হয়ে যাচ্ছে। রোগবালাইয়েও আক্রান্ত হয়েছে কিছু খেত। কীটনাশক ছিটাতে না পারায় সেসব খেতে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। মরে যাচ্ছে অনেক ধানগাছ।


উপজেলার ঢাকিরগাঁও গ্রামের বোরো চাষি মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ১০০ একর জমিতে বোরোর আবাদ করেন। এসব খেতের বোরো গাছ এখন শিষ ছাড়ার পথে। জরুরি ভিত্তিতে সেখানে ইউরিয়া সার ছিটানো দরকার। পোকামাকড়ের আক্রমণ দেখা দেওয়ায় কিছু কিছু খেতে কীটনাশক ছিটনো উচিত। কিন্তু দোকানপাট বন্ধ থাকায় সার ও কীটনাশক কিনে খেতে ছিটাতে পারছেন না। এ ছাড়া শ্রমিকের অভাবে খেতে পানির সেচও দিতে পারছেন না। এ জন্য বোরো খেত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।


দেলোয়ার হোসেন আরও বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে এবার বোরোর ফলন ভালো হবে না। ফলন ভালো না হলে উৎপাদন খরচই মিলবে না। গুনতে হবে বড় ধরনের লোকসান। বোরো আবাদ করে এবার মহাদুশ্চিন্তায় রয়েছেন তিনি।

উপজেলার উদ্দমদী এলাকার চাষি ফরহাদ মিয়া এবং নলুয়া এলাকার শাকিল মিয়া বলেন, কৃষকদের কথা চিন্তা করে সার ও কীটনাশকের দোকান সার্বক্ষণিক খুলে দেওয়া উচিত। এ ছাড়া কৃষিশ্রমিকদের জন্যও খেতে কাজ করার সুযোগ করে দেওয়া দরকার। এটি না হলে এবার বোরোর ফলন লাটে উঠবে। বিপাকে পড়বেন তাঁরা।

বোরো চাষের এই পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দিলরুবা খানম বলেন, বোরো খেতে এখন ‘টপ ড্রেসিং’–এর (শিষ ছাড়ার আগে ইউরিয়া প্রয়োগ) সময় চলছে। এ সময় জমিতে কীটনাশক, সার ও সেচ দেওয়া অত্যাবশ্যক। তবে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে লকডাউন চলায় এসব কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না চাষিদের পক্ষে। এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বোরোর উৎপাদনে। চাষিদের স্বার্থে অন্তত সার ও কীটনাশকের দোকান খোলা রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।