Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্যবস্থাপত্রের গরমিলে রোগীর বারোটা!

নিজ বাড়িতে বিছানায় শুয়ে আছেন জয়নাল ফকির।

লেখাপড়া জানেন না মো. জয়নাল ফকির। হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ কিনে খাচ্ছিলেন। কিন্তু রোগ ভালো হওয়ার বদলে দিন দিন শরীর খারাপ হচ্ছিল। চার মাস পর চিকিৎসকের নজরে আসে, তিনি ভুল ব্যবস্থপত্র অনুযায়ী ওষুধ খাচ্ছিলেন। বর্তমানে তাঁর শারীরিক অবস্থা জানতে চিকিৎসক তাঁকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বলেছেন।

ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জয়নাল ফকির (৫১)। গত ২০ মার্চ বুকে ব্যথা নিয়ে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে যান। সেখান থেকে তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের হৃদ্‌রোগ বিভাগে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হলে ২৭ মার্চ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জয়নাল ফকিরকে ছাড়পত্র দেয়।

বাড়িতে ফিরে ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ কিনে খেতে থাকেন জয়নাল। শুক্রবার এই প্রতিবেদক বাড়িতে গেলে জয়নাল ফকির বলেন, হাসপাতালের চিকিৎসায় সুস্থবোধ করলেও ছাড়পত্রে লেখা ওষুধ খাওয়ার পর থেকে তাঁর নানা ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে শুরু করে। একপর্যায়ে তিনি বাড়িতে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। পরে ১৬ জুলাই তিনি ময়মনসিংহে গিয়ে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হন। রোগীর মুখ থেকে সবকিছু শোনার পর ওই চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র লেখার শুরুতে রোগীর নাম জিজ্ঞেস করেন। রোগী নিজের নাম জয়নাল ফকির বললে গরমিলটি ধরা পড়ে।
প্রকৃতপক্ষে রোগী জয়নাল ফকির হলেও প্রায় চার মাস ধরে তিনি মুক্তগাছা উপজেলার মজিবর রহমানের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ খেয়ে আসছিলেন।

মজিবর রহমানের ব্যবস্থাপত্র কোথায় পেলেন জিজ্ঞেস করলে জয়নাল ফকির বলেন, ‘আমি পড়ালেখা জানি না। আমার স্ত্রীও জানে না। ছুটি হওয়ার পর হাসপাতালের লোকজন আমার হাতে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়ি যেতে বলে দেয়।’

জয়নাল আরও বলেন, ‘ছাড়পত্রটি যদি আমার না হয়, তাহলে সেটি আমাকে দেওয়ার তো কথা নয়। আমি একজন কাঠমিস্ত্রি। ঘর মেরামত করা আমার পেশা। আমার চার ছেলে অন্যের বাড়িতে জায়গির থেকে মাদ্রাসায় পড়ালেখা করে। ভুল ওষুধ ক্রয়ের পেছনে আমার প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।’

জয়নাল ফকির বলেন, ছাড়পত্র প্রদানের সময় কর্তৃপক্ষের আরও দায়িত্বশীল হওয়া প্রয়োজন। তাঁর মতো পড়ালেখা না জানা অনেকেই চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান। তবে কে তাঁকে ছাড়পত্র দিয়েছে, তাঁর নাম বলতে পারেননি তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক জাকিউল ইসলাম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন শত শত রোগীর ছাড়পত্র নিয়ে কাজ করে। আর ঘটনাটি যেহেতু মার্চ মাসের, তদন্ত না করে এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব হবে না।