Thank you for trying Sticky AMP!!

ভালো আচরণে বেশি রাজস্ব

উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিস সম্পর্কে মানুষের মধ্যে ছিল নেতিবাচক ধারণা। কর্মচারীদের ইতিবাচক আচরণ সে ধারণা পাল্টে দিয়েছে।

নাটোর জেলার মানচিত্র

এক কক্ষে বসেই নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ভূমি অফিসগুলোতে মিলছে হয়রানিমুক্ত ভূমিসেবা। ‘গণশুনানি কেন্দ্র’ ও ‘ভূমিসেবা সপ্তাহ’–এর মতো কর্মসূচি চালু করায় এই পরিবর্তন এসেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এতে সেবার বিপরীতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে।

এসব সেবার আওতায় ভূমি উন্নয়ন কর, নামজারি, খাসজমির বন্দোবস্ত, অর্পিত সম্পত্তি লিজ নবায়ন, দোকানের লাইসেন্স দেওয়া ও নবায়নে সেবা নেন গ্রাহকেরা। সর্বশেষ মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ১৮ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি চালু করা হয় বিশেষ ভূমি সপ্তাহ। উপজেলা ভূমি অফিসসহ ছয়টি ইউনিয়ন ও পৌরভূমি অফিসগুলোতে চলে সেবা সপ্তাহের কার্যক্রম। এতে সেবা নেন ১ হাজার ৫৭৪ জন। বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয় ৫ লাখ ১১ হাজার ৫২৬ টাকা।

উপজেলা ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোকে ঘিরে সেবার বিপরীতে নেতিবাচক অনেক কথা প্রচলিত আছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। গুরুদাসপুর উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, সে ধারণা পাল্টে দিতে সবার আগে পাল্টাতে হয়েছে ‘আচরণ’। ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা ব্যক্তিদের সঙ্গে ভালো আচরণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। আর বিশেষ সেবা সপ্তাহে সেবাগ্রহীতাদের অভ্যর্থনা জানানো হয় ফুল দিয়ে।

২০১৯ সালে উপজেলা ভূমি অফিসে চালু করা হয় ‘গণশুনানি কেন্দ্র’। সাধারণ মানুষ সেখানে সপ্তাহের এক দিন (প্রতি বুধবার) তাঁদের অভিযোগ বলার সুযোগ পান। অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সেসব সমস্যার সমাধানও করা হয়। এসব কারণেই দালাল না ধরে মানুষ ভূমি অফিস থেকেই সেবা নিচ্ছেন।

এদিকে বাৎসরিক হিসাবেও গুরুদাসপুর উপজেলায় গত বছরের তুলনায় ভূমি রাজস্ব আয় বেড়েছে। উপজেলা ভূমি অফিসের অন্তর্ভুক্ত ইউনিয়ন ভূমি অফিসগুলোতে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭ মাসে গড়ে ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয় ৭ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৭ টাকা। অন্যদিকে চলতি বছরের ১৮ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা ভূমিসেবা সপ্তাহ শেষে মার্চ মাস পর্যন্ত প্রায় দেড় মাসেই ভূমি উন্নয়ন কর আদায় হয় ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩৮৮ টাকা।

২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সাত মাসে নামজারির মাধ্যমে আদায় হয় প্রায় ৩ লাখ ৫৪ হাজার ৬৪০ টাকা। আর চলতি বছরের ভূমিসেবা সপ্তাহ শেষে নামজারির মাধ্যমে আদায় হয় ৪ লাখ ৩১ হাজার ১০০ টাকা।

গত ২৭ থেকে ২৮ মার্চ উপজেলা পরিষদের আম্রকাননে অনুষ্ঠিত উন্নয়ন মেলায় ছিল ভূমি অফিসের স্টল। সেখানে সেবা নিতে আসা অন্তত ১০ জন ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, এখন এক কক্ষে বসেই সেবা মিলছে। এ জন্য বাড়তি টাকাও গুনতে হচ্ছে না।

গুরুদাসপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু রাসেল বলেন, এই কার্যক্রম অনেকটা সফল। ভবিষ্যতেও এ ধরনের সেবা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। আর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তমাল হোসেন বলেন, ভূমি অফিসগুলোকে জনবান্ধব, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতেই ‘বিশেষ ভূমিসেবা সপ্তাহ’ চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এখন দালালদের উৎপাত নেই ভূমি অফিসে।